বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে উঠতে পারে পদ্মা সেতু । যে সেতুকে ঘিরে বাংলাদেশের মানুষের এখন প্রবল উচ্ছ্বাস। আগামী ২৫ জুন এই সেতুর উদ্বোধন হতে চলেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সারাদেশে এক উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
কিন্তু এই সেতুর নির্মাণ নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। সেই বিতর্কগুলির মধ্যে একটি হল, এই সেতুর নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্য এসেছে বিদেশ থেকে। এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতর একটি বিবৃতি জারি করেছে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, কিছু কিছু মহলের দাবি, এই সেতু নির্মাণ নাকি চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ। যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে সরকার। তাঁদের দাবি, এই সেতু নির্মাণে কোনও বৈদেশিক বিনিয়োগ নেই।
পদ্মা সেতু ৯.৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল সেতু। সেতুতে রেলের ডাবল স্টেক কনটেইনার লোড মেইন ব্রিজে ব্যয় হচ্ছে ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। নদী শাসন ১৪ কিলোমিটারে ব্যয় ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২ হাজার ৭০০ হেক্টর ভূমি হুকুম দখলে খরচ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ১২ কিলোমিটারে ৬ লেন সংযোগ সড়কে ব্যয় ১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। কনসালট্যান্ট ফি, সেনা নিরাপত্তা, কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ও অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ৩ ডায়ামিটারের ১২২ মিটার লম্বা পাইপ, এটি ওয়ার্ল্ডের রেকর্ড। বিশ্বের কোথাও এমন ডায়ামিটারের লম্বা পাইপ কোথাও ব্যবহার করা হয়নি।
উল্লেখযোগ্য তথ্য হল, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যামার পদ্মা সেতুতে ব্যবহার করা হয়েছে। যার ওজন ৩ হাজার ৫০০ টন। ৪ হাজার টন ওজনের ক্রেন এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। ৯৬ হাজার কিলোনিউটন ভূমিকম্প পিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে। ২৫ জুন উদ্বোধনের পর ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলবে।
পদ্মা সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে ৪১৫টি। এছাড়া দুপাড়ের সংযোগ সড়কে বসেছে ২০০টি ল্যাম্পপোস্ট। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে ৮০ কিলোওয়াটসম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সেতুর দুই প্রান্তের সাবস্টেশন থেকে এসব ল্যাম্পপোস্টে দেয়া হবে বিদ্যুৎ সংযোগ।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার দিন যতই এগিয়ে আসছে, সম্ভাবনা আর প্রত্যাশার নতুন দিকও উন্মোচিত হচ্ছে।