গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানাধীন কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকায় নাসা গ্রুপের লিজ এপারেলসে সকালে কাজ করতে গিয়ে কারখানা বন্ধ দেখে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল গুলি নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকরা এই বিক্ষোভ শুরু করে।
কারখানা মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরীফ হোসেন জানান, প্রতিবছর শেষে শতকরা ৫ ভাগ বেতন বৃদ্ধির নিয়ম থাকলেও এ ব্যাপারে জানুয়ারির শুরু থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকরা বার বার দাবি জানালেও তাতে তারা সাড়া দিচ্ছিল না। এমতাবস্থায় গত বুধবার ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে কর্মস্থল থেকে ফ্যাক্টরির কম্পাউন্ডে অবস্থান নেয়। পরে ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার মোশাররফ হোসন তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং পুনরায় কারখানায় কাজে যোগ দিতে বলেন। এ নিয়ে ওইদিন শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন এবং কারখানা এলাকা ত্যাগ করেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ জানান, বুধবার তারা বিক্ষোভ এবং কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর করায় এবং বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কোন কাজে যোগ না দেয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষ শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দেয়।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি শেষে শনিবার সকালে কারখানার প্রধান ফটকে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখার পরও ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশ শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
অপরদিকে ওই কারখানা পরিচালক গাজী মোহাম্মদ জাবের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কারখানার শ্রমিকরা গত বুধবার আমাদের নির্দেশ অমান্য করে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন শুরু করে এবং এক কর্মকর্তাকে বেধড়ক মারধর করে। এছাড়াও কারখানার ফ্লোরে ঢুকে আসবাবপত্র, কম্পিউটার, সিসি টিভি, ল্যাপটপ ভাঙচুর করে এবং অফিস থেকে ১৫ লাখ টাকা চুরি করেছে। এসব কারণে ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী আজ থেকে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ওই প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর আল-আমিন বলেন, বেশ কয়েকমাস যাবৎ বেতন ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা চাচ্ছিলাম, কিন্তু তারা দিচ্ছে না। বরং আমাদের উপর মিথ্যে অপবাদে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন পুলিশের কারণে আমরা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছি না। কিন্তু আমরা হঠাৎ চাকরি ছেড়ে কোথায় যাবো।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, পুলিশ লাঠিচার্জ ছাড়াও তিন রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস সেল ও ৫৭ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ