‘জয় বাংলা উৎসব’-এ মাতলো এবার বরিশাল। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দীপক স্লোগান জয় বাংলায় মুখরিত হল বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান।
দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য শিল্পীদের গান ও দেশসেরা তারকাদের পারফর্মেন্সে মেঘ মেদুর দিনে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি দর্শকের উচ্ছ্বাসে অনুষ্ঠিত হল বর্ণাঢ্য এ উৎসব। দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্টির উদ্যোগে ও সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় ১৬ জুন সন্ধ্যায় বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অনুষ্ঠিত হল এ উৎসব।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসের সংগীত পরিচালনায় এবারের উৎসবে চমকপ্রদ লাইনআপে পারফর্ম করেছে তাপস এন্ড ফ্রেন্ডস। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অসংখ্য মিউজিশিয়ানসহ বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্রের তারকাশিল্পীদেরও সন্নিবেশ ঘটছে উৎসবের নানা পারফর্মেন্সে।
সকলের জন্য উন্মুক্ত এ উৎসবে হাজির হন বরিশালের হাজারো তারুণ্য। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, আইসিটি বিভাগ, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি। তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণে সফলতায় আমরা পুরো দেশ আজ আনন্দিত। এটি যদিও জয় বাংলার উৎসব তবু এ উৎসবকে আমরা পদ্মা সেতুর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর উৎসবে পরিণত হোক। পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে পদ্মার দুই পাড়ের জনগণ উপকৃত হবে। বরিশালের উন্নয়নের জন্যও আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন খাতে আপনাদের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবো।”
আলোচনা পর্ব শেষে সম্মাননা প্রদান পর্বে জয় বাংলা স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখায় ফুলেল সম্মাননায় সিক্ত হন সালমান এফ রহমান। আগত অতিথিদের হাতেও সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দেশাত্মবোধক নানা গানে পারফর্ম করেন চলচ্চিত্র তারকারা। এসো বন্ধু এসো গানে ঈগল ড্যান্স কোম্পানির কোরিওগ্রাফিতে পারফর্ম করেন তমা মির্জা। ও পৃথিবী গানে পারফর্ম করেন, নিরব, ইমন ও লামিয়া। জয় বাংলা ও দে তালি গানে পারফর্ম করেন টলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। এগিয়ে চলো ও লাল সবুজের গানে পারফর্ম করেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।
এরপরপরই লাইভ পারফর্মেন্স করে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড নেমেসিস। টিএম রেকর্ডসের জনপ্রিয় কিছু গানের পরিবেশনায় স্ব স্ব গানে নাচের তালে দর্শক মাতান লুইপা, দোলা ও তাসনিম আনিকা।
সবশেষে বর্ণাঢ্য পারফর্মেন্সে উৎসব মাতান ‘তাপস এন্ড ফ্রেন্ডস’-এর সাথে আগত শিল্পীরা। পারফর্ম করেছেন চিশতি বাউল, বালাম, আরেফিন রুমি, ঐশী, লুইপা,পারভেজ, প্রতিক হাসান, দোলা, আনিকা, ডোরা, রেশমি, পূজা, শামিম, হাসিব, এবিডি, পূলক, প্রিয়, সাব্বির, তূর্য, শাফায়েত, তৌফিক, মুগ্ধ। গান গেয়ে উৎসব মাতিয়েছেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ। তাদের সঙ্গে বাদ্যে যুক্ত হন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মিউজিশিয়ানরা।
উৎসবে পারকাশন বাজান-উপমহাদেশের অন্যতম পারকাশনিস্ট শিবামনি, ড্রামস- গিনো ব্যাঙ্কস, বেজ গিটার -এনটন ডেভিডিয়েন্টস, গিটারে আরও ছিলেন রিদম শ ও সঞ্জয় দাশ, এসরাজ-আরশাদ খান, ম্যান্ডোলিন-ইউ রাজেশ, বাঁশিতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে দেশের জনপ্রিয় শিল্পী জালাল, সেলো- আরটিয়ম ম্যানিকিয়ন, ভায়োলিন- আনা রাকিতা, ভায়োলা-রুসলানা মেমচিঙ্কো, ফ্রেঞ্চ হর্ন-রুটা মন্টে, হারমোনিয়াম-মাখন, রিদম-শুভাদীপ মিত্রসহ প্রমুখ।
তারুণ্যের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে রাত দুটা পর্যন্ত চলে এ উৎসব আয়োজন।
জাতীয় স্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি উদযাপন ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে দেশব্যাপী ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত হচ্ছে এ উৎসব। তারই ধারাবাহিকতায় বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আয়োজিত হল এ অনুষ্ঠান।
রাজশাহীর সময়/এম