পুঠিয়ায় অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ল্যাবের ছড়াছড়ি : শুরু হয়নি অভিযান


পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি : , আপডেট করা হয়েছে : 12-06-2022

পুঠিয়ায় অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ল্যাবের ছড়াছড়ি : শুরু হয়নি অভিযান

অনিবন্ধিত বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও এর বাস্তবায়ন নেই রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায়। ফলে বিনা বাধায় নিবন্ধন ছাড়াই রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন মালিকেরা। অভিযান চালানোর বিষয়ে প্রশাসনের নেই তৎপরতা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সঠিক তালিকা না পাওয়ার কারণে অভিযান চালানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলছেন, সকল ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

গত ২৬ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে সারা দেশের অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় অনিবন্ধিত ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের জন্য অভিযান চালানো হলেও পুঠিয়ায় এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা

জানা গেছে, উপজেলায় সরকারী তালিকাভূক্ত মোট ৮টি ক্লিনিক ও ৫টি প্যাথলজি সেন্টার রয়েছে। তবে ওই তালিকার বাহিরে আরও ১১টি প্যাথলজি ও ২টি ক্লিনিক অবৈধভাবে কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই ব্যবসা করে যাচ্ছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রক্ত, মলমূত্র, কফসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন অদক্ষ কর্মীরা। তাই প্রায়ই এসব পরীক্ষার বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পাওয়া যায়। সেবা নিতে এসে রোগীরা নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন বিধিমালার অন্যতম শর্ত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিতে নির্দিষ্ট শয্যা (১০/১৫/২০) থাকতে হবে। একটি প্যাথলজি বিভাগ, একটি তথ্যসেবা দানকেন্দ্র থাকতে হবে। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য তালিকার বিলবোর্ড থাকতে হবে, আগত রোগীদের জন্য একটি অপেক্ষমাণ কক্ষ থাকতে হবে, আলাদা আলাদা নমুনা সংগ্রহের জায়গা থাকতে হবে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড-কেবিন ও টয়লেট থাকতে হবে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক একটি দায়িত্বরত চিকিৎসক, তিনজন সেবিকা ও একজন টেকনোলজিস্ট থাকতে হবে। থাকতে হবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসসহ বেশ কয়েকটি অনুমতি।

সরোজমিনে দেখা যায়, উপজেলায় অনুমোদনহীনসহ বেশির ভাগ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে বিধিমালার বেশির ভাগ শর্ত মানা হয়নি। ক্লিনিকগুলোতে দিনের যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেবিকা ও টেকনোলজিস্ট পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের দেখা মেলা ভার। তাই বেশির ভাগ সময় চিকিৎসকের কাজ করানো হচ্ছে সেবিকা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের দিয়ে। এমনকি কোনো কোনো সময় একজনই একসঙ্গে চিকিৎসক, সেবিকা ও টেকনোলজিস্টের দায়িত্ব পালন করেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তালিকা ঝোলানো থাকলেও মূলত চিকিৎসা দেন নার্স ও প্যারামেডিক। সব ক্লিনিকে রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতিও নেই। ওরা দু-এক দিনের সময় নিয়ে বাইরে থেকে রিপোর্ট এনে রোগীদের সরবরাহ করেন। ফলে অনেক সময় রিপোর্ট সঠিক পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছে। ওই নির্দেশনা কার্যকর করতে অত্র উপজেলায় কয়টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, তার তালিকা করা হয়েছে। সবগুলোতে জনগণ শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ’র বলেন, কটি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধভাবে চলছে, সেগুলোর সঠিক তালিকা এখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমার কাছে হস্তান্তর করেনি। উনি তালিকা করে দিলেই আমরা অভিযান চালিয়ে সেসব হাসপাতাল বন্ধ করে দেব।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]