ভারতে আত্মঘাতী হামলার হুমকির আগে বাংলাদেশেও হামলার হুমকি দিয়েছে আল-কায়েদা। ব্লগার অনন্ত বিজয় ও শাফিউল ইসলামকে হত্যায় অভিযুক্ত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় এই হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি।
আফগানিস্তানে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস) রোববার এক বিবৃতি দিয়ে এই হুমকি দিয়েছে। এর একদিন পর ভারতেও হামলা চালানোর হুমকি দেয় আল-কায়েদা।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে হামলা চালানোরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। ব্লগার শাফিউল ইসলাম ও অনন্ত বিজয়কে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে হত্যার দায়ে সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ায় বাংলাদেশে হামলার হুমকি এবং সরকারের নিন্দা জানিয়েছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারকে ‘হিন্দুত্ববাদ এবং তাগুতের আজ্ঞাবহ অ্যাজেন্ট’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার ইসলামবিদ্বেষীদের বিচারের আওতায় আনেনি। এর পরিবর্তে তথাকথিত ‘নিরপরাধ’ ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এই নিরপরাধ ব্যক্তিরা একিউআইএসের মুজাহিদিন ছিলেন, যারা ইসলামের অবমাননাকারীদের হত্যা করেছে’।
বাংলাদেশে হামলা চালানোর হুমকির একদিন পর দিল্লি, মুম্বাই, উত্তর প্রদেশ এবং গুজরাটে আত্মঘাতি বোমা হামলার হুমকি দিয়েছে একিউআইএস। দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নুপুর শর্মার মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ভারতকে শিক্ষা দিতে এই হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভারতে হামলার ব্যাপারে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গেরুয়া জঙ্গিরা তাদের শেষ পরিণতির জন্য তৈরি হোক দিল্লি, মুম্বাই, উত্তর প্রদেশ ও গুজরাটে’।
ভারতকে হুমকির বার্তায় আরও বলা হয়েছে, ‘তারা না নিজেদের বাড়িতে না নিজেদের সেনা ক্যান্টনমেন্টে নিরাপদ আশ্রয় পাবে। আমরা যদি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদের অপমানের প্রতিশোধ না নিতে না পারি তাহলে যেন আমাদের মায়েরা শোকাহত হন। যারা হযরত মুহাম্মদকে অসম্মান করেছে, তাদের শেষ করে দিতে আমরা নিজেদের শরীরে এবং নিজেদের সন্তানদের শরীরে বোমা বেঁধে উড়িয়ে দেব। কাউকে ক্ষমা করা হবে না’।
এই হুমকির বিবৃতি সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের শেয়ার করতে দেখা গেছে। এ ঘটনার পর হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে পুরো ভারতজুড়ে।
বাংলাদেশ এবং ভারতে হামলার হুমকি থেকে আফগানিস্তান-পাকিস্তানে এই গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর এই দুই দেশে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি তালেবানের সহায়তায় আফগানিস্তানে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও আল-কায়েদা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাজশাহীর সময়/এ