দাম না পেয়ে হতাশ নাটোরের আখ চাষিরা। সংকটের মুখে জেলার দুটি চিনিকলকে গুণতে হচ্ছে লোকসান। এক বছরে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন কমেছে উৎপাদন।
পাঁচ বছর ধরে আখের দাম না বাড়ায় এমন সংকটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মণপ্রতি ২৪০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে আখ চাষি ফেডারেশন। আখ সংকটে জেলার দুটি চিনিকলকে অব্যাহত লোকসান গুণতে হচ্ছে।
নাটোর জেলায় ধান পাটের পাশাপাশি আখ অর্থকারী ফসল। আখের পর্যাপ্ত উৎপাদনেরর কারণে ১৯৩৩ সালে জেলার লালপুর উপজেলার গোপালপুরে নর্থ বেঙ্গল চিনিকল ও ১৯৮৪ সালে সদর উপজেলার লেংগুড়িয়া এলাকায় নাটোর চিনিকল স্থাপিত হয়।
৫ আগে বছর প্রতিমণ আখের দাম ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বিভিন্ন ফসলের দাম বৃদ্ধি হলেও আখের দাম বাড়ান হয়নি। কৃষকরা বলছেন, আখ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন টাকা কেজি দরে। এতে কৃষকরা অন্য ফসলে ঝোঁকায় গত ১ বছরে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন কমেছে।
এ অবস্থায় চিনিকলে আখ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিমণ আখের দাম ২৪০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে আখ চাষি ফেডারেশন।
বাংলাদেশ আখ চাষি ফেডারেশনের সহসভাপতি মোসলেম উদ্দিন বলেন, 'আখের দাম বাড়াতে হবে। নাহলে কৃষক ও চিনিকল কোনোটাই টেকানো যাবে না।
কৃষিবিভাগও মনে করে কৃষকেরা, অন্যন্য ফসলে লাভবান হওয়ায় আখ উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ইয়াসিল আলি বলেন, 'আখের দাম না পাওয়ায় ক্যাপসিকাম ও নানা ধরনের সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এতে করে আখের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ছে।'
চলতি বছরই আখের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান চিনিকলের শীর্ষ।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন বলেন, 'কৃষকদের দাবি-দাওয়া আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। আমরা আশা করছি, আখের দাম বাড়ালে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।'
গত ৫ বছরে দুটি চিনিকলের মাড়াইয়ের চেয়ে জেলায় দ্বিগুণ আখ উৎপাদন হলেও কলগুলোতে আখ সরবরাহ কমছে। গত তিন বছরে চিনিকলের উৎপাদন নেমে এসেছে তিনভাগের এক ভাগে।