অবিলম্বে ভোট ঘোষণা না করা হলে পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী বলে হুঁশিয়ারি দিলেন সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান সরকারের সঙ্গে জনসাধারণের কোনও যোগ নেই, সমর্থন নেই। এমন সরকার বেশিদিন চলতে পারে না।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি যাওয়ার পর থেকেই ইমরান দফায় দফায় ফোঁস করছেন। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকেরা দেশ জুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করে। বর্তমান সরকার বিক্ষোভ দমনে লাগাতার গ্রেফতারের পথ নিতে ইমরান দেশের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে আদালতকে।
একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নাম না করে সেনার দিকে খবরদারি করার আঙুল তুলেছেন। ২০১৮-তে ইমরান ক্ষমতায় আসার সময়ই বিরোধী শিবির এবং সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, সেনার মদতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসেছেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক। কিন্তু ইমরান কখনই তা মানতে চাননি। কিন্তু এ বছর এপ্রিলে পাকিস্তানে আচমকা পালা বদলের পিছনেও সেনার হাত ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছিল। এখন স্বয়ং ইমরান নাম না করে সামরিক বাহিনীর দিকে আঙুল তুলেছেন। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেন না। আড়াল থেকে নানাভাবে সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে। বলেছেন, আমি কাদের কথা বলছি দেশবাসী তা জানেন। আজ নয়, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকেই ওদের কথায় দেশ চলছে।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী সেনার নাম উল্লেখ না করে আরও বলেছেন, ওরা অবশ্য কিছু ভাল কাজ করেছে। সেটা মানতেই হবে। কিন্তু পদে পদে হস্তক্ষেপ করে থাকে।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, আগামী বছরের মার্চে পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ভোট হবে ধরে নিয়ে অন্যান্য দলের পাশাপাশি ইমরান প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জনতার কাছে মুখরক্ষার অস্ত্র করতে চাইছেন সেনাকে। বোঝাতে চাইছেন, সেনার হস্তক্ষেপের জন্য অনেক ভাল কাজ করতে পারেননি। যদিও পাক সংবাদমাধ্যম এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের বক্তব্য, ইমরান না সরলেই বরং দেশে অশান্তি গৃহযুদ্ধের আকার নিতে পারত।