চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া, এ বছর কাঙ্খিত দাম পেয়ে খুশি প্রান্তিক লিচু চাষিরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে , উপজেলার প্রায় ৬৯০ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এ বছর লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৭৬৭ মেট্রিক টন। আর বাগানগুলোর প্রায় ৯৫ ভাগ গাছেই লিচু ধরেছে। বড় ধরনের কোনো দূর্যোগ না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বেশি লিচু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উৎপাদিত লিচুতে ৭ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকারবাণিজ্য হবে বলে আশাবাদীস্থানীয় কৃষি বিভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার জামনগর, রহিমানপুর, তকিনগর, তমালতলা, যোগিপাড়া, নওশেরা এবং গালিমপুর এলাকায় বেশি লিচুর চাষ হয়। ইতোমধ্যে বম্বাই ও স্থানীয় (আঁটি) জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে। লিচু চাষিরা জানায়, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা সরাসরি বাগান থেকে লিচু ক্রয় করছেন। এ বছর বম্বাই জাতের লিচু চাষিদের নিকট থেকে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা প্রতি হাজার হারে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
লিচু চাষি আখতার হোসেন বলেন, এ বছর তাঁর পাঁচ বিঘা বম্বাই জাতের বাগানে ভালো লিচু ধরেছে। পাইকাররা বাগানে এসে লিচুর দাম করছেন। আশা করছেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় দুই-একদিনের মধ্যে বিক্রয় করতে পারবেন। লিচুর এই ফলন ও দামে খুশি তিনি।
আর একজন লিচু চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, চার বিঘা জমিতে তাঁর লিচু বাগান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর তার বাগানে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে ইতিমধ্যে লিচু বিক্রিও শুরু করেছেন। প্রতি হাজার লিচু ১ হাজার ৮০০ টাকায় বাগান থেকে পাইকাকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এপর্যন্ত ১লাখ ৮০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করছেন। আশা করছেন প্রায় ৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন। তবে সার-কীটনাশক বেশি দাম ও চড়া দামে শ্রমিক নেয়ায় লাভের পরিমাণ কিছুটা কম হচ্ছে।
লিচু ক্রেতা মীর মেহেদী হাসান বলেন, ১ শ লিচু ২শ ৭০ টাকায় কিনেছি। এবার লিচু খুব স্বুসাদু হয়েছে। তবে একটি বিষয়ে আমার সন্দেহ লাগছে যে, লিচু কীটনাশকমুক্ত কিনা। আমি চাষিদের কাছে অনুরোধ করব শিশুদের কথা চিন্তা করে কীটনাশকমুক্ত লিচু উৎপাদন করুন।
বরিশাল থেকে লিচু কিনতে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী বাবর হোসেন জানান, কয়েক দিন ধরে এই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় পাইকারি লিচু কিনে বরিশাল পাঠাচ্ছেন। তিনি প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার লিচু বরিশালে পাঠিয়ে থাকেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাগাতিপাড়ায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আর দাম ভালো থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।