হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটকারী পি কে হালদারকে কারাগারে রাখার নির্দেশ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 27-05-2022

হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটকারী পি কে হালদারকে কারাগারে রাখার নির্দেশ

হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটকারী পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গে আরও ১১ দিন জেল হেফাজতে থাকবেন। ইডির আইনজীবী ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন করেন। আদালত ১১ দিনের জেল হেফাজত মঞ্জুর করেন।

এর আগে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার ফের আদালতে তোলা হয় অর্থ পাচারকারী পি কে হালদার ও তার ৫ সহযোগীকে। কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের স্পেশাল সিবিআই ১ নম্বর কোর্টে বিচারক মাসুক হোসেইন খানের সামনে তাদের হাজির করা হয়।

এখনো পর্যন্ত পি কে হালদারসহ ধৃত ছয়জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার সংক্রান্ত ভারতীয় আইনের মানিলন্ডারিং অ্যাক্ট ৩ এবং ৪ ধারায় একটিমাত্র মূল মামলা দায়ের করেছে ইডি। শুক্রবার দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অতিরিক্ত মামলা দায়ের করতে পারে ইডি। চাইতে পারে জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি।

প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, প্রথম তিন দিনের জেরা শেষই প্রায় ১৫০কোটি রুপির বেশি সম্পদের হদিস পেয়েছিল ইডি। বিগত ১০ দিনে ক্রমাগত জেরা ও তল্লাশি অভিযানে শেষে আরো একাধিক সম্পত্তি ও নগদ অর্থের হদিস পেয়েছে ইডি। তবে তার সর্বমোট মূল্য ৩০০ কোটি রুপির বেশি নয়। 

অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ধৃত ছয়জনের কাছ থেকে প্রায় ২৪টি মোবাইল ফোনসহ ৮১টি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট অর্থাৎ মোবাইল, ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার উদ্ধার করেছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এরমধ্যে ২৪টি মোবাইলের ডেটা হাতে আসার পরেই ইডি কর্মকর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে।

সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ৬০০০ কোটি টাকার বেশি পাচারের তথ্য মিললেও বাস্তবে পাওয়া সম্পদের পরিমাণ অনেকটাই কম। তদন্তকারী আধিকারিকদের ধারণা পাচারের একটা বড় অংশের টাকা পিকে হালদার ও তার সঙ্গীরা গোপনে অন্যত্র লগ্নি করেছেন। 

কিন্তু ঠিক কোথায় তারা লগ্নি করেছেন তা এখনো স্বীকার করেননি তারা। ফলে প্রশ্ন উঠছে বাকী অর্থ কোথায় রাখলেন পি কে হালদার। এর মধ্যে বাজেয়াপ্ত করা ফোনের কলের লিস্ট ঘেঁটে একাধিক দেশে আন্তর্জাতিক কলের হদিস পাওয়া গেছে- যার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে দুবাই, সিঙ্গাপুর, কানাডাসহ কয়েকটি রাষ্ট্র।

তবে কি ভারত হয়ে এই বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে অন্য কোন দেশে তা জানতেই আরো জেরা প্রয়োজন মনে করছেন গোয়েন্দারা। 

নিয়মিত ফোন কলের বদলে মেসেঞ্জার হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফোন কলগুলি করেছিলেন অভিযুক্তরা। ফলে মোবাইল নম্বর পেলেও ফোন কলের ডিটেলস তথ্য পেতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ইডির। আদালতের নির্দেশ পেলে ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পরীক্ষার জন্য ডাকা হতে পারে ফরেন্সিক টিমকেও। যদিও তার সবটাই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

সূত্র বলছে ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলেই হাই প্রোফাইল এই মামলার তদন্ত ভার দেয়া হতে পারে ভারতের আরেকটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। যেখানে অভিযুক্তদের অবৈধ দ্বৈত নাগরিকত্ব, অবৈধ ভারতীয় নথি, অবৈধ অনুপ্রবেশ , অবৈধ অর্থ লগ্নি সংক্রান্ত একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করতে পারে সিবিআই। ইডি সূত্রে দাবি ধৃতেরা জেরায় বাংলাদেশের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম বললেও সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত এক বাংলাদেশী ব্যক্তির নাম আসছে ঘুরে ফিরে।

নাম না জানানোর শর্তে ইডির এক তদন্তকারী কর্মকর্তা বলছেন, শর্মী হালদারের কাছ থেকে মিলেছে বেশ অনেক তথ্য। তারা বলছে তুরুপের তাস হতে পারে পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার। শর্মীর সঠিক পরিচয় নিয়ে এখনও কৌতুহল নানা মহলে। 

প্রথমে পিকে হালদারের ভাই প্রাণেশ (প্রীতিশ) হালদারের স্ত্রী বলে তার পরিচয় জানা গেলেও পরবর্তীকালে তার পরিচয় নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। কে এই নারী- নিশ্চিত করে জানায়নি ইডিও, কেউ বলছেন শর্মী আদতে পি কে হালদারের স্ত্রী, কেউ আবার বলছে ওই নারী পি কের বান্ধবী।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]