পুলিশের নাম ভাঙিয়ে টাকা নিতেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা


বগুড়া প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 18-05-2022

পুলিশের নাম ভাঙিয়ে টাকা নিতেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা

বগুড়ার নন্দীগ্রামে পুলিশকে ম্যানেজ করার কথা বলে এক গার্মেন্টস কর্মীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ধরা খেয়েছেন মাহমুদ আলী মাহমুদুল (৪৬) নামের এক মৎস্যজীবী লীগ নেতা। গার্মেন্টস কর্মীর জমি-সম্পত্তি বন্দক রেখে টাকা নেন ওই ব্যক্তি। থানায় মামলা করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাৎ করায় রোববার (১৫ মে) রাতে কথিত ওই দালালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। থানার মামলা নং- ০৫, ধারা- ৪২০, ৪০৬। এ মামলায় পৌরসভা এলাকার ওমরপুর থেকে উপজেলা মৎম্যজীবী লীগের সদস্য সচিব মাহমুদ আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি ওমরপুর এলাকার মৃত আজগর আলীর ছেলে। উপজেলার পাঁচগ্রাম এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আমিনুর ইসলাম বাদী হয়ে প্রতারণার মামলাটি দায়ের করেন।

মঙ্গলবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, থানায় মামলা-অভিযোগ ও জিডি করতে কোনো টাকা লাগে না। প্রতারণা করে টাকা নিয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়ে মাহমুদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, পাঁচগ্রামের আমিনুর ইসলাম ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাই আব্দুল কুদ্দুসের হাতে মারপিটের শিকার হন। এ ঘটনায় গত ২ মে চাচাতো ভাই মোখলেছুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে আসেন ওই গার্মেন্টস কমী। থানার গেটের বাইরে ছিলেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা মাহমুদ। গার্মেন্টস কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, কি জন্য থানায় এসেছে। মারপিটের শিকার হয়েছেন এবং কোনোদিন থানায় অভিযোগ করেননি জানালে সরলতার সুযোগ নেয় কথিত দালাল মাহমুদ। নিজে উপস্থিত থেকে মামলা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই ভূক্তভোগীকে থানার সামনে থেকে বিজরুল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। এরপর হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে জানিয়ে তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নেন মাহমুদ।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওইদিন বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামের সামনে ভূক্তভোগীকে নিয়ে গিয়ে মাহমুদ জানায়, ‘থানায় মামলা করতে ১৭ হাজার টাকা লাগবে। ভূক্তভোগীর কাছে টাকা না থাকায় জমি-সম্পত্তি বন্দক রেখে টাকা দিতে বলেন। সে মোতাবেক একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ৮শতক সম্পত্তি চাচাতো ভাই মোখলেছুরের কাছে ২০ হাজার টাকায় বন্দক রাখেন। ওই স্ট্যাম্প লিখে দেন এবং তাতে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন মাহমুদ। তিনি মামলা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে জমি বন্দকের ১৭ হাজার টাকা নেন। এসময় মোখলেছুরসহ দুইজন উপস্থিত থেকে দেখেছেন।

পরে একটি কম্পিউটার দোকানে গিয়ে অভিযোগ লিখে এনে ভূক্তভোগীকে থানায় নিয়ে অভিযোগ দায়ের করান। থানায় টাকা দেওয়ার বিষয়টি কেউ যেন না জানে, কেউ জানলে সমস্যা হবে বলে ভূক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। কয়েকদিন পর ওই গার্মেন্টস কর্মী থানায় গিয়ে জানতে পারেন, থানায় অভিযোগ বা মামলা করতে টাকা লাগে না। মৎস্যজীবী লীগ নেতা মাহমুদ একজন প্রতারক। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে এই ব্যক্তির কাছে অনেক ভূক্তভোগী প্রতারণার শিকার হয়েছেন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]