পরকীয়া প্রেমিককে ডেকে নিজ স্বামীকে হত্যা ঘটনায় ১৮ ঘন্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা সহ ঘটনার সাথে জড়িত ২জনকে গ্রেফতার করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশ। এ সময় পরকীয়া প্রেমে ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার (১১ মে) সকাল ৮টায় গোমস্তাপুর থানাধীন নজরপুর গ্রামের আড্ডা রহনপুর মেইন রোডের পাশে মোঃ নজরুল অরফে ইসলাম (৬০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।
ওই সময় তারা গোমস্তাপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত পূর্বক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় এর জন্য লাশের পোস্টমর্টেম এর জন্য আধুনিক সদর হাসপাতাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রেরন করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব বিপিএম পিপিএম (বার) দিক-নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি দল রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে।
লাশের পাশে থাকা একটি প্লাস্টিকের দড়ির সূত্র ধরে ভিকটিমের ৩য় স্ত্রী লালবানু কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোমস্তাপুর (সার্কেল) এর নেতৃত্বে ভিকটিমের ৩য় স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে তার নিজ বাড়ীতে চা স্টলের দোকার ছিলো।
সে সুবাদে বাড়ীর পাশের ইট ভাটার ম্যানেজার শাকিরের সাথে তার পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত মার্চ মাসে শাকির এনায়েতপুর বাজার থেকে তার নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশনকৃত একটি নতুন সিম কার্ড ও মোবাইল কিনে ভিকটিমের স্ত্রী লালবানুকে দেয়। এভাবে গোপনে চলতে থাকে লালবানু ও শাকিরের পরকীয়া প্রেম কাহিনী।
ভিকটিমের অগোচরে তার স্ত্রী অতি গোপনে শুধুমাত্র ওই মোবাইল দিয়ে শাকিরের সাথে কথা বলত এবং কথা বলা শেষে মোবাইল টি লুকিয়ে রাখত।
কিছুদিন আগে ভিকটিম বিষয়টি টের পেলে তার স্ত্রীকে মারধর করে এবং প্রেমিক শাকিরকে গালিগালাজ করে সাবধান করে দেয়। এরই জেরে সাকির খুব রাগান্বিত হয় এবং ভিকটিমকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে । অপরদিকে ভিকটিম তার স্ত্রীকে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায় মারধর করত।
ফলে ভিকটিমের স্ত্রী তার প্রেমিকের কথায় সহজে রাজী হয়ে যায় এবং ভিকটিমকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম তার শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়লে ভিকটিমের স্ত্রী ও প্রেমিক শাকির রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ভিকটিমকে বালিশের উপরে দেওয়া কাঁথা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
ভিকটিমের দুই পা চেপে ধরে তার স্ত্রী এবং গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চত করে প্রেমিক শাকির । অতঃপর ঘটনার মোড় অন্য দিকে ধাবিত করতে লালবানু ও শাকির ভিকটিমের মরদেহ কাধে করে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে রাস্তার পাশে রেখে আসে। ভিকটিমের স্ত্রীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী প্রেমিক শাকিরকে গ্রেফতার করা হয়।