যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের শুধু টুইন টাওয়ারের পর আরও ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল ওসামা বিন লাদেনের। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইটন টাওয়ারে বিমান হামলা ৯/১১ নামে পরিচিতি পেয়েছে। ওই হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। এ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল লাদেন।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর মার্কিন নেভি সীল দ্বারা প্রাপ্ত কাগজপত্রগুলো সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে জানা যায়, আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ৯/১১ এর পর ফলো-আপ হামলা চালানোর জন্য যাত্রীবাহী বিমান ব্যবহারের পরিবর্তে ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহারকে উৎসাহিত করেছিলেন।
প্রকাশ করা নথিতে আরো বলা হয়েছে, ওসামা বিন লাদেন তার অনুসারীদেরকে উসকে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রেললাইনে ১২ মিটার কেটে ফেলার ব্যাপারে। ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় শত শত মানুষের মৃত্যুর প্রত্যাশা ছিল তার।
আল-কায়েদা নিয়ে গবেষণায় কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করা লেখক নেলি লাহুদ ১১ বছর আগে জব্দ করা ওসামা বিন লাদেনের ব্যক্তিগত চিঠি এবং নোটের হাজার হাজার পৃষ্ঠা পরীক্ষা করেছেন। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। তারাই নথিগুলো জব্দ করেছিল।
সিবিএস নিউজকে এক ঘণ্টা ধরে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নেলি লাহুদ। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ৯/১১ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যে যুদ্ধে যাবে, তা আগে অনুমানও করতে পারেনি আল-কায়েদা।
নেলি লাহুদ বলেছেন, লাদেনের চিঠি দেখিয়েছে যে- ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বরের নৃশংসতার ঘটনায় মার্কিনিরা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তা দেখে সন্ত্রাসীরা বিস্মিত হয়েছিল।
তিনি আরো বলেছেন, ওসামা বিন লাদেন ভেবেছিলেন যে-(টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনায়) মার্কিনিরা রাস্তায় নেমে আসবে এবং তাদের সরকারকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র থেকে সরে আসতে চাপ দেবে। ওসামা বিন লাদেনের এটি ছিল বড় ধরনের ভুল হিসাব।
দলের সদস্যদের সঙ্গে ওসামা বিন লাদের চিঠি বিশ্লেষণ করে নেলি লাহুদ দেখেছেন, আল-কায়েদায় সহযোগীদের সঙ্গে প্রায় তিন বছর যোগাযোগ করেননি লাদেন। এরপর ২০০৪ সালে তিনি আবারো আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। যুক্তরাষ্ট্রে হামলার তার নতুন পরিকল্পনার ব্যাপারে সদস্যদের প্রস্তাবও দেন তিনি।
টুইন টাওয়ারে হামলার অনুরূপ হামলা চালানোর জন্য ভীষণ আগ্রহী ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। তবে বিমানবন্দরগুলোতে অত্যন্ত কঠিন নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়েও সচেতন ছিলেন তিনি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী হামলার জন্য যাত্রীবাহী বিমানের পরিবর্তে ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহারের প্রস্তাব করেছিলেন। আর যদি বিমান ব্যবহার করে আক্রমণ চালানো খুব কঠিন হয়, তাহলে মার্কিন রেলওয়েকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন লাদেন।
রাজশাহীর সময়/এমজেড