চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ছোট ভাইকে হত্যার অভিযোগে আপন বড় ভাই-ভাবী গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় ভূজপুর থানাধীন শান্তিরহাট ছোট বেতুয়া এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন: চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানাধীন সরফভাটা গ্রামের মৃত উকিল আহম্মদ ছেলে খোরশেদ আলম (৪৫) ও খোরশেদ আলমের স্ত্রী খালেদা বেগম ওরফে শামীম।
অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল।
র্যাব জানায়, গত ৯ এপ্রিল ২০২২ বিকাল আনুমানিক ৫টার সময় বসত বাড়ির জায়গার সীমানা পিলার নির্ধারণ নিয়ে নিহত ভিকটিম ও তার আপন ভাই খোরশেদ আলম এর মধ্যে তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিতর্কের এক পর্যায়ে ভিকটিমের আপন ভাবি খালেদা এবং ভাই খোরশেদ আলম লোহার সাবল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ছোট ভাই নিহত ভিকটিম জানে আলমের মাথায় আঘাত করলে জানে আলম এর মাথা ফেঠে রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে জানে আলম চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তার বড় ভাই খোরশেদ আলম লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে জানে আলম এর শরীরের বিভিন্নস্থানে উপুর্যপরি আঘাত করতে থাকলে জানে আলম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পডে যায়। তখন জানে আলমের স্ত্রী জোসনা বেগম ডাক চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মমূর্ষ অবস্থায় জানে আলমকে প্রথমে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানে আলম এর অবস্থা আশংকা জনক দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। জানে আলম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল সকাল পোনে ১০টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগম বাদী হয়ে গত ১২ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় নিহত ভিকটিম জানে আলম এর আপন বড় ভাবি খালেদা বেগম (৪০) এবং বড় ভাই খোরশেদ আলম(৪৫) এর নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার মামলা নং- ১, তারিখ ১৩ এপ্রিল, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
র্যাব আরও জানায়, ঘটনাটি আপন বড় ভাই ও ভাবী কর্তৃক নির্মমভাবে ছোট ভাই’কে প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট করে হত্যা বিষয়টি চাঞ্চল্যকর ও লোম হর্ষক হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্ঠি করে। বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গুরুত্বের সহিত আমলে নিয়ে আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিকদল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলার ভূজপুর থানাধীন শান্তিরহাট ছোট বেতুয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত ভিকটিম জানে আলম দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকা কালীন সময় কষ্টার্জিত অর্থ তার আপন ভাই আসামী খোরশেদ আলমের কাছে পাঠাত। পরবর্তীতে জানে আলম দেশে ফিরে আসার পর তার ভাই খোরশেদ আলমের কাছে বিদেশ থেকে পাঠনো টাকা ফেরত চাইলে আসামী খোরশেদ আলম উক্ত টাকা ফেরত দিতে অপারগতা স্বীকার করে। মূলত জানে আলম বিদেশ থেকে আসার পর টাকা ফেরত চাওয়ার কারনে বিরোধ ছিল যার কারনে তার ভাবি ১নং আসামী খালেদা বেগম ওরফে শামীম এবং ভাই ২নং আসামী খোরশেদ আলমের সাথে ছোটভাই জানে আলমের বিরোধ সৃষ্টি হয়। জানে আলম বিরোধ পছন্দ না করার কারনে আলাদা বাড়ী করে বসবাস করছিল কিন্তু আসামী খোরশেদ আলম ও তার স্ত্রী খালেদা বেগম নির্মম ভাবে জানে আলমকে হত্য করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানায় হন্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।