ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র অর্থায়নে, ডিনেট এবং ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম (এফএনএফ বাংলাদেশ) যৌথভাবে ‘Foster Responsible Digital Citizenship to Promote Freedom of Expression in Bangladesh’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল ডিজিটাল সিটিজেন হতে সহায়তা করা এবং তাঁদের মাঝে গঠনমূলকভাবে স্বাধীন মত প্রকাশের চেতনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার (এপ্রিল ১৯) জাঁকজমক ফেসবুক লাইভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল সিটিজেনশিপ চ্যালেঞ্জ, ২০২২-এর ফাইনাল রাউন্ড আড়ম্বরপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
ফেসবুকে এই আকর্ষনীয় অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছে প্রায় ছয় হাজার দর্শক। এই ফাইনাল রাউন্ডের মাধ্যমে ২৬০ জন তুখোড় প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা বিশ জনকে বাছাই করা হয়। এই সেরা বিশ ডিজিটাল সিটিজেন প্রত্যেকেই পুরস্কার হিসেবে পাচ্ছে একটি আকর্ষণীয় ট্যাব এবং উপহার সামগ্রীতে আরো থাকছে মুদ্রিত সার্টিফিকেট, কলম, ডায়েরি, টি-শার্ট, মাস্ক, কাপড়ের ব্যাগ, পাটের ফোল্ডার।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীরা ছাড়াও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সমাজের প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, মিডিয়া প্রতিনিধি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন অংশীদার অংশ নেন যারা তরুণদের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। গালা রাউন্ডের এই জমকালো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, মেজবাহ উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। এছাড়াও অনুষ্ঠানে তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এফএনএফ বাংলাদেশ থেকে কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ নাজমুল হোসেন এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিনেট থেকে নির্বাহী পরিচালক এম শাহাদাৎ হোসেন। অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন ডিনেটের পক্ষ থেকে ইলমা হক।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সচেতনতা, ইন্টারনেটে সুরক্ষা, দায়িত্বশীলতার সাথে স্বাধীন মত প্রকাশ, ডিজিটাল আইন, ডিজিটাল অপরাধ, অনলাইনে ব্যক্তি পরিচয়, মিথ্যাচার ও ভুল খবর প্রচার এবং এ সংক্রান্ত আরও অনেক বিষয়ে আলোচনা করা হয়। লাইভ ইভেন্টটি দেখুন এই লিংকে: fb.watch
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, মেজবাহ উদ্দিন বলেন- আমাদের তরুণ সমাজ ডিজিটালে খাপ খাইয়ে নিয়ে আজকে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছে। যে সমস্ত যুব সমাজ এই ডিজিটাল কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত নাই তাঁরা কিন্তু অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে এবং তাঁরা এই পিছিয়ে যদি থাকে তাহলে দেশের উন্নয়ন কিন্তু ব্যাহত হবে। প্রত্যেকটি মানুষকে, বিশেষ করে যুব সমাজকে এই ডিজিটাল কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।
ডিজিটাল সিটিজেনশিপ চ্যালেঞ্জ, ২০২২-এ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন প্রকল্পের ওয়েবসাইট https://www.digitalcitizenbd.com/-এর আটটি কোর্সের কুইজে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। কুইজ বিজয়ী ১৬০ জন ছাড়াও ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রির মাধ্যমে আরো ১০০ জন প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল গালা রাউন্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। যাদের মধ্য থেকে বিজয়ী নির্বাচিত হন সেরা বিশ জন ডিজিটাল সিটিজেন। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এই শিক্ষার্থীবান্ধব ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সিটিজেনশিপ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় জানতে পারেন এবং একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা চর্চার পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন। যা তাঁদের ডিজিটাল দুনিয়ায় বিচরণের ক্ষেত্রে আচরণগত পরিবর্তন এনে একজন গর্বিত ডিজিটাল নাগরিকে পরিণত হতে সহায়তা করছে।
রাজশাহীর সময়/এএইচ