যে ১২ কারণে রোজা ভাঙে না


ধর্ম ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 18-04-2022

যে ১২ কারণে রোজা ভাঙে না

ইসলাম মধ্যমপন্থার ধর্ম। এতে না আছে কোনো বাড়াবাড়ি, আর না আছে ছাড়াছাড়ির সুযোগ। মাহে রমজানের অন্যতম বিধান সিয়াম সাধনা। এর জন্য প্রয়োজন সংযম। কিন্তু এ সংযম পালনে দৈনন্দিন ভুলবশত কিছু বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ির শিকার হই। আমাদের জীবনে এমন কিছু কাজ আছে, যা দ্বারা রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। অথচ অনেকে এগুলোকে রোজা ভঙ্গের কারণ মনে করে। ফলে এমন কোনো কাজ হয়ে গেলে রোজা ভেঙে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃত পানাহার করে। পক্ষান্তরে কেউ কেউ এসব কাজ পরিহার করতে গিয়ে অযথা কষ্ট ভোগ করে। সুতরাং এসব বিষয়ে সব রোজাদারের অবগত হওয়া জরুরি। এমনই ১২টি বিষয় নিয়ে লিখেছেন মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ।

রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার

কোনো রোজাদার রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে তার রোজা নষ্ট হবে না। তবে রোজার কথা স্মরণ হওয়ামাত্রই পানাহার ছেড়ে দিতে হবে। (সহিহ মুসলিম : ১/২০২, আল বাহরুর রায়েক : ২/২৭১)।

রোজার দিনে চোখে ওষুধ-সুরমা লাগানো

রোজা রেখে রোজার দিনে চোখে ওষুধ-সুরমা ইত্যাদি লাগালে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। (সুনানে আবি দাউদ : ১/৩২৩, রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৫)।

রাতে স্ত্রী সহবাস বা স্বপ্নদোষের পর গোসল না করা

রাতে স্ত্রী সহবাস করলে বা স্বপ্নদোষ হলে সুবহে সাদিকের আগে গোসল করতে না পারলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে কোনো ওজর ছাড়া (বিশেষত রোজা অবস্থায়) দীর্ঘ সময় অপবিত্র থাকা অনুচিত। (ফতোয়ায়ে শামি : ২/৪০২)।

রোজার দিনে স্ত্রীকে চুমু খাওয়া

বীর্যপাত ঘটা বা সহবাসে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে রোজার দিনে স্ত্রীকে চুমু খাওয়া জায়েজ। তবে কামভাবের সঙ্গে চুমু খাওয়া যাবে না। আর যুবকদের যেহেতু এমন আশঙ্কা থাকে, তাই তাদের এটা এড়িয়ে চলা উচিত। (মুসনাদে আহমদ : ২/১৮০ ও ২৫০, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/২০০)।

অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়া

অনিচ্ছাকৃত বমি হলে (মুখ ভরে হলেও) রোজা ভাঙ্গবে না। তেমনি বমি মুখে এসে নিজে নিজে ভেতরে চলে গেলেও রোজা ভাঙ্গবে না। (তিরমিজি : ৭২০, রদ্দুল মুহতার : ২/৪১৪)।

শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার ও নখ বা চুল কাটা

রোজা রেখে শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার করলে রোজা ভাঙ্গবে না। অনুরূপভাবে রোজার দিনে নখ বা চুল কাটলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৪/৩১৩, আল বাহরুর রায়েক : ২/১৭৩)।

যৌন চিন্তার কারণে বীর্যপাত হওয়া

রোজা রেখে শুধু যৌন চিন্তার কারণে বীর্যপাত হলে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে এ কথা বলাই বাহুল্য যে, সব ধরনের কুচিন্তা তো এমনিতেই গোনাহ। আর রোজা রেখে তো তা আরও বড় অপরাধ। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি। (রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৬)।

ক্রিয়া-কর্ম ছাড়া বীর্যপাত হওয়া

কামভাবের সঙ্গে কোনো মেয়েলোকের দিকে তাকানোর ফলে কোনো ক্রিয়া-কর্ম ছাড়াই বীর্যপাত হলে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে রোজা অবস্থায় স্ত্রীর দিকেও এমন দৃষ্টি দেওয়া অনুচিত। আর অপাত্রে কুদৃষ্টি দেওয়া তো গোনাহ। যা রোজা অবস্থায় আরও ভয়াবহ। এতে ওই ব্যক্তি রোজার ফজিলত ও বরকত থেকে মাহরুম হয়ে যায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৬/২৫৯, ফতোয়ায়ে শামি : ২/৩৯৬)।

অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর কীট-পতঙ্গ ঢোকা

মশা-মাছি, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর ঢুকে গেলেও রোজা ভাঙ্গবে না। অনুরূপ ধোঁয়া বা ধুলোবালি অনিচ্ছাকৃতভাবে গলা বা পেটের ভেতর ঢুকে গেলে রোজা ভাঙ্গবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৬/৩৪৯, রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৫)।

স্বপ্নে পানাহার ও স্বপ্নদোষ হওয়া

রোজার দিনে রোজা অবস্থায় স্বপ্নে পানাহার করলে বা কারও স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গবে না। (সুনানে কোবরা, বায়হাকি : ৪/২৬৪)।

চোখের দু’এক ফোটা পানি মুখে গড়ানো

চোখের দু’এক ফোটা পানি মুখে চলে গেলে রোজার ক্ষতি হয় না। তবে তা যদি গলার ভেতর চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। (আল মুহিতুল বোরহানি : ৩/৩৪৯)।

অজ্ঞান বা অচেতন হওয়া

সুস্থ অবস্থায় রোজার নিয়ত করার পর যদি অজ্ঞান বা অচেতন হয়ে যায়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। (সুনানে কোবরা, বায়হাকি : ৪/২৩৫)।

রাজশাহীর সময় / এম আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]