জাল টাকার কারবারিদের দৌরাত্ম্য, টার্গেট ঈদের বাজার


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 13-04-2022

জাল টাকার কারবারিদের দৌরাত্ম্য, টার্গেট ঈদের বাজার

পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাল টাকা তৈরি করে সমগ্র দেশে সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে রাজধানীর লালবাগে ৫ থেকে ৬ মাস আগে একটি বাসা ভাড়া নেয় অষ্টম শ্রেণি পাস লিটন। জাল টাকা তৈরির পর প্রতি লাখ নোট বিক্রি হতো ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়।

জাহাঙ্গীর নওগাঁ, নাটোর, বগুড়াসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকেন। খুচরা বিক্রেতারা শহরের ব্যস্ততম এলাকায় রেস্টুরেন্ট, ভোজ্য সামগ্রী, প্রসাধনী, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় ভালো টাকার ভেতরে জাল টাকা চালাতো।

মঙ্গলবার রাজধানীর লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা ও রুপি তৈরিতে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অবৈধ মাদক উদ্ধার টিম।

গ্রেপ্তাররা হলেন, জাহাঙ্গীর আলম, আলী হায়দার, তাইজুল ইসলাম লিটন ও মহসিন ইসলাম মিয়া। এসময় জাল টাকা ও রুপি তৈরিতে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, বিভিন্ন রকমের কালি, স্ক্রিন ফ্রেম, বিশেষ ধরনের কাগজ, কেমিক্যালস, স্ক্যানার মেশিন, কাটার ও স্কেল উদ্বার করা হয়।

এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে তৈরিকৃত বিভিন্ন মূল্যমানের প্রায় ২০ লাখ জাল বাংলাদেশি টাকা ও দেড় লাখ ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে ডিবির গুলশান গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে করোনা মহামারি পরবর্তী সুষ্ঠু পরিবেশে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যের সঙ্গে অর্থনৈতিক মহাযজ্ঞ চলছে। রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে জালনোট কারবারিরা বাজারে জাল নোট ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যায়। ওই তথ্য যাচাই বাছাই ও বিশ্লেষণ করে জাল মুদ্রা কারবারিদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল ডিবি পুলিশ।

তিনি বলেন, জাল টাকা ও রুপির একটি চালান সংগ্রহের জন্য নাটোর থেকে ঢাকায় এসেছিল জাল মুদ্রা কারবারি জাহাঙ্গীর আলম। তাকে অনুসরণ করে গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার বেল ১১টার দিকে নবাবগঞ্জ বেড়িবাঁধ এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ছয়তলা বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি পুলিশ জানায়, ফ্ল্যাটটি গত ৫ থেকে ৬ মাস ধরে ভাড়া নিয়ে রেখেছিল চক্রটি। উদ্দেশ্য ছিল রমজানের আগে ও মাঝে এখানে বিপুল পরিমাণে জাল মুদ্রা তৈরি করে সমগ্র দেশে সরবারহ করা। গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জাল টাকা তৈরি ও বিক্রির একাধিক মামলা রয়েছে।

অষ্টম শ্রেণি পাস লিটন এ কারখানার মূল পরিচালক। দীর্ঘদিন নীলক্ষেতে কম্পিউটারের দোকানে গ্রাফিক্সের কাজ করায় বিভিন্ন ধরনের জাল কাগজপত্র, দলিলাদি, জাল টাকা/রুপি বানাতে পটু লিটন।

ডিবিরি এই কর্মকর্তা বলেন, লিটন বিশেষ ধরনের কাগজ কিনে তা জোড়া লাগানো, কাগজে বঙ্গবন্ধুর ও গান্ধীর ছবি স্ক্রিন প্রিন্টিং/জলছাপ দেয়া, রংয়ের সমন্বয়ের কাজ করেন। জাল টাকার নিরাপত্তা সুতা জোড়া লাগান আইকা বা অন্যান্য গাম দিয়ে। বঙ্গবন্ধু বা মহাত্মা গান্ধীর ছবি তিনি নিজে মূল টাকা থেকে স্ক্যানিং করে পেনড্রাইভে নিয়ে রাখেন।

নিরাপত্তা সুতা তৈরির জন্য ডায়াস কেনেন। জলছাপ দেয়া হলে দুটি বিশেষ ধরনের কাগজ একসঙ্গে জোড়া দিয়ে শুকিয়ে এরপর টাকা প্রিন্টিংয়ে যায়।

তার এসব কাজে সহযোগিতা করে আলী হায়দার। জাল টাকা তৈরির পরে ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। জাহাঙ্গীর ও মহসিন মূলত লিটনের কাছ থেকে জাল টাকা ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজারে কিনে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভে বিক্রি করেন।

রাজশাহীর সময় / এম আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]