ঠাকুরগাঁওয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব হোটেল ও রেস্তোরা বন্ধ ঘোষণা করেছে হোটেল মালিক ও শ্রমিক সমিতি।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাতে জেলার হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি শ্রমিক সমিতির সঙ্গে হোটেল মালিক সমিতি একযোগে এই ঘোষণা দেয়। এদিকে শ্রমিক না থাকার শঙ্কায় বেকারিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকেরা।
জানা গেছে, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩-এর অধীন ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার। এ সময় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গাওসিয়া ও হোটেল রোজ-এর ম্যানেজারের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার রুবেল হোসেন ও গাওসিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই হোটেলের অর্ধশত হোটেল শ্রমিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে ও চৌরাস্তা ট্রাফিক মোড়ে ইফতারের খাবার ফেলে প্রতিবাদ শুরু করেন। শ্রমিক হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে আটক শ্রমিকের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ঘোষণা করে দুই হোটেলের শ্রমিকেরা।
এ সময় দুই হোটেল শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্ম প্রকাশ করে জেলার সব শ্রমিকের কর্মবিরতি ঘোষণা করেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল ও বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদিন।
জয়নাল আবেদিন বলেন, আমরা গরিব হোটেল শ্রমিক। আমাদের ওপর জেল জুলুম কেন। শ্রমিকদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে হোটেলে কাজে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের শ্রমিক ভাইদের নিঃশর্ত মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে যাব না। কোন হোটেলে কাজ করব না। না খায়ে মরে যাব, তবুও কাজে যাব না।
অতিরিক্ত জরিমানা ও হেনস্থার প্রতিবাদে হোটেল শ্রমিকের সিদ্ধান্তে একাত্মতা জানিয়ে জরিমানা বাতিল না করা পর্যন্ত হোটেল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি অতুল কুমার পাল।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইনে তুচ্ছ ভুলের কারণে হোটেল রোজ ও গাওসিয়াকে তিন লাখ করে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করে করা হয়েছে। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার ও গাওসিয়ার ম্যানেজারকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এই কারণে কর্ম বিরতি দিয়েছে শ্রমিকরা। আমরা তাদের সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করছি।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার জানান, ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ নিয়মিত পরিচালনা করা হবে।
রাজশাহীর সময়/এএইচ