সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোর্স পরিচয়ধারীরা। তারা চোরাকারবারীদের সংঘঠিত করে প্রতিদিন লাখলাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করছে নানান প্রকার পন্য-সামগ্রী ও মাদকদ্রব্য। তবে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণকারী ওই সব সোর্সদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। তাই সোর্স পরিচয়ধারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৫টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের বর্ডার বাজারে সামনে দিয়ে ও ১২০৫নং পিলার সংলগ্ন কবিরের বাড়ির সামনে দিয়ে পাঁচারকৃত ৬লাখ টাকার ফুছকা, চিনি ও মদ দুপুর ১২টা থেকে ২৫টা মোটর সাইকেল দিয়ে পরিবহন করে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা ও পুরান লাউড় রাস্তা দিয়ে ওপেন ক্যাম্প সংলগ্ন লাউড়গড় বাজারসহ পাশের ঢালারপাড় গ্রামে নিয়ে মজুত করে সোর্স পরিচয়ধারী ১১জনসহ চোরাকারবারীরা।
এরআগে গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভোর রাত সাড়ে ৪টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বডার বাজার এলাকা দিয়ে প্রায় ১২লাখ টাকার ফুছকা, চিনি, কমলা, কাজু বাদাম, জিরা ও মদ পাচাঁর করে শাহ আরেফিন পাকা রাস্তার মাথায় অবস্থিত ৪-৫টি বাড়িতে মজুত করে সোর্স ও চোরাকারবারীরা। পরে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩০টা মোটর সাইকেল দিয়ে পরিবহণ করে ওপেন লাউড়গড় বাজার ও ঢালারপাড় গ্রামের নিয়ে মজুত করা হয়। এই সীমান্তে একাধিক মামলার আসামীরা নিজেদেরকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে জাদুকাটা নদীসহ সীমান্তের একাধিক পয়েন্ট দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে।
অন্যদিকে একই ভাবে পাশের চাঁনপুর সীমান্তে রাজাই কড়ইগড়া ও বারেকটিলার আনন্দপুর, টেকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গছড়া, বড়ছড়া, নীলাদ্রী লেক পাড়, খনি প্রকল্প, হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকাসহ পাশের বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা, লালঘাট, চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট, বাঁশতলা, এলসি পয়েন্ট, কলাগাঁও মাইজহাটি, জঙ্গলবাড়ি, লামাকাটা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা ও চুনাপাথরসহ সুপারী, চিনি, সুপারী ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিশ্ব ম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর, চিনাকান্দি, ডলুরা ও মধ্যনগর সীমান্তের বাঙ্গলভিটা ও মাটিরান এলাকা দিয়ে ভারত থেকে গরু, চিনি,কসমেটিকস, রসুন, সুপারী ও মাছসহ মাদকদ্রব্য পাচাঁরের খবর পাওয়া যায়। কিন্তু চোরাকারবারীদের মদতদাতা সোর্স পরিচয়ধারীদের গ্রেফতারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।
এদিকে গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে দিরাই রাস্তার পয়েন্ট এলাকার একটি চায়ের দোকানের সামনে অভিযান চালিয়ে ৭ কেজি গাজা ভর্তি ১টি ব্যাগসহ নেত্রকোনা জেলা সদরের ৪নং সিংহের বাংলা ইউনিয়নের পঞ্চনপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী সুজন মিয়া (২৫) ও ময়মনসিংহ জেলার ঈশ^রগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ইউনিয়নের চরশংকত গ্রামের এমদাদুল মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের পরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন নাথ জানান-গাজাসহ আটককৃত ২জনের বিরুদ্ধে রাতে তিনি নিজে বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।