পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে নয়ছয়; রাবিতে ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি


রাবি প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 26-11-2024

পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে নয়ছয়; রাবিতে ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি

গত ১৪ নভেম্বর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনে বসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অতিসত্বর তা বাতিলের সিদ্ধান্ত আসবে এমন আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরালেও সিদ্ধান্ত নিতে নয়ছয় করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে এক সপ্তাহের বেশি সময়ে সিদ্ধান্ত না আসায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন আবার হবে দূর্বার আন্দোলন।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা বহাল রেখে নাতি-নাতনি কোটা বাতিল করা হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও খেলোয়াড় কোটার ক্ষেত্রে পূর্বের নিয়ম বহাল থাকে। অন্যদিকে পোষ্য কোটা বাতিলের জোর দাবি থাকলেও তা ১% কমিয়ে ৩% রাখা হয়। 

ফলশ্রুতিতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় সমালোচনার ঝড়। অন্যদিকে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। তৎক্ষনাৎ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকি স্টেকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে অতিসত্বর তা বাতিল করা হবে এমন আশ্বাস দিলেও ১১ দিনে আসেনি কোনো সিদ্ধান্ত। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

আনোয়ার হোসেন নামে এক রাবি শিক্ষার্থী 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ' নামক ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, "জুলাই বিপ্লবের জিহাদের কথা মনে আছে তো নাকি?? পোষ্য কোটা নিয়ে রাবি প্রশাসন যদি নতুন করে রংতামাশা করে আবার জিহাদের ডাক দিতে বাধ্য হবে রাবি শিক্ষার্থীরা"।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, "কাল ক্ষেপন করে স্পিরিট কমানোর চিন্তা প্রশাসনের থাকলে সেটা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা শুধু সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। প্রশাসনের  সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। মনে রাখবেন শহীদের রক্তের উপর দিয়ে বাবার কোটা আমরা এক্সেপ্ট করবো না। বাবার কোটার প্রধানমন্ত্রীকেও আমরা দেশ ছাড়া করেছি আর এই বাবার কোটা নির্মূল করার জন্য আবারো আলাদা আন্দোলন করা লাগবে ভাবতেই শহীদের রক্তের মূল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

এ কোটা বাতিল করা না হলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আম্মার আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো নয়ছয়ের চেষ্টা করলে কঠোর সিদ্ধান্তে আসবে শিক্ষার্থীরা। আমাদের রাজপথে এখন ২টা কর্মসূচি। যদি কোটা বাতিল করে তাহলে মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি আর বাতিল না করলে রক্ত বিতরণ কর্মসূচি। আর এই রক্ত অধিকার আদায়ের জন্য বিতরণ করা হবে"।

এবিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসে কোটা প্রথা পূর্বের অবস্থায় থাকার যৌক্তিকতা রাখে না। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটার মতো একটি বৈষম্যমূলক সিস্টেম চালু থাকতে পারে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনকে অবশ্যই পোষ্য কোটা বাতিল করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।"

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, "পোষ্য কোটা থাকবে নাকি বাতিল হবে এবিষয়ে রিভিউ কমিটি ইতিমধ্যে পাঁচ দফা মিটিং করেছে। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখছি। মাঝে খেলাসহ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে বেশ বিলম্ব হয়েছে। আরেকটি বড় মিটিং রয়েছে সেটার পর চূড়ান্ত সুপারিশ আসবে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা ফলাফল দিতে সক্ষম হবো"


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]