রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতির প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 22-11-2024

রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতির প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয়ে দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন উপপরিচালক (ডিডি) রোজী খন্দকার। বুধবার বিকেলে রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় তিনি এ অভিযোগ করেন। এতে উপপরিচালকের দপ্তরে ঢুকে ‘উচ্চ স্বরে ধমক দেওয়া’ ও ‘বকাবকি’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

নগরের চন্দ্রিমা ওসি মতিয়ার রহমান বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, ‘রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপপরিচালক রোজী খন্দকার একটা অভিযোগ পাঠিয়েছেন থানায়। এ ব্যাপারে সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে এখনো কোন সিদ্ধান্ত পায়নি।

এর আগে সকালে পাসপোর্ট অফিসের সামনে শালবাগান বাজারে ‘ভুক্তভোগী রাজশাহীর সাধারণ জনগণ’-এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানে বক্তারা অভিযোগ করেন, পাসপোর্ট অফিসে যেসব ফাইল দালালের মাধ্যমে আসে, সেগুলোর কাজ দ্রুত হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহান। বক্তারা ডিডি রোজী খন্দকারের অপসারণও দাবি করেন।

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদকারীরা ডিডির কার্যালয়ে যান। তাঁদের সঙ্গে সাংবাদিকেরাও ছিলেন। সেই সময়ের ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফোন কানে ধরে ডিডি রোজী খন্দকার জামাত খানকে বলেন, ‘আপনি প্লিজ প্রমাণ দেবেন। আপনি প্রমাণ দিয়ে কথা বলবেন।’ এ নিয়ে কিছু সময় ধরে দুজনের বাদানুবাদ চলে। এরপর জামাত খান বলেন, ‘আপনি আপনার অফিসের সব অনিয়ম দূর করবেন। আপনাকে এক মাসের সময় দেওয়া হলো।’

ওই সময় ডিডির কক্ষে থাকা একজন আনসার সদস্যও তোপের মুখে পড়েন। ইউনিফর্মে নেমপ্লেট না থাকার কারণে তাঁকে ঘিরে ধরা হয়। কেউ কেউ বলেন, এই আনসার সদস্য দুর্নীতির সহায়তাকারী। কিছু সময় পর সবাই ডিডির কক্ষ থেকে বের হয়ে চলে আসেন। পরে বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ পাঠান ডিডি।

অভিযোগের বিষয় হিসেবে লেখা হয়, ‘পাসপোর্ট অফিসে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে।’

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বেলা আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আবু সাঈদ, রাজু, জামাত খান, সাগরসহ ৪০-৪৫ জন আকস্মিকভাবে ক্যামেরা চালু রেখে রোজী খন্দকারের কক্ষে প্রবেশ করেন। রোজী খন্দকার তাৎক্ষণিক পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ফোন করলে জামাত খান তাঁকে উচ্চ স্বরে ধমক দেন এবং অকথ্য ভাষায় বকাবকি করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যরাও বিচ্ছিন্নভাবে নানারূপ ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলতে থাকেন।’

অভিযোগে ডিডি রোজী খন্দকার লেখেন, ‘শান্ত হয়ে অনিয়মের প্রমাণাদি দাখিল করতে বলা হলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং অনিয়ম দূর করার জন্য আমাকে এক মাসের আলটিমেটাম দেন। অফিসে আসা আবু সাঈদ মোয়াল্লেমের দায়িত্বে আছেন। সেই সুবাদে তিনি প্রায়ই হাজিদের নিয়ে অফিসে আসেন এবং সেবা নিয়ে যান। ১৮ নভেম্বরেও তিনি দুজন হাজি আবেদনকারীর সেবা নিয়ে যান। পরে জানা যায়, এই আবু সাঈদের উদ্যোগে মানববন্ধনসহ আমার কক্ষে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’

থানায় অভিযোগ করার ব্যাপারে কথা বলতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপপরিচালক রোজী খন্দকারকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। এর আগে বুধবার দুপুরে তিনি তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমতি ছাড়া তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।

যোগাযোগ করা হলে জামাত খান বলেন, ‘বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিসগুলোতে দুর্নীতি হয়। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়, এটি সবার জানা। রাজশাহীতে অসুস্থ মানুষ ও হজযাত্রীদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে আমরা মানববন্ধন করেছি। এরপর উপপরিচালকের কার্যালয় কথা বলতে গিয়েছিলাম। উনি আমাদের কথা তোয়াক্কা না করে মহাপরিচালককে ফোন দিচ্ছিলেন। তখন আমরা উচ্চ স্বরে কথা বলেছি এবং শেষে আমরা সরি বলেছি। তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আমাদের ভালোভাবে বিদায়ও দিয়েছেন। এরপরে আমিসহ সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]