মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 13-11-2024

মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়া এলাকায় এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তারই ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯) মা উম্মে সালমা খাতুন (৫০)কে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে। পরে, ঘটনাটি ডাকাতির ঘটনা হিসেবে সাজানোর জন্য আলমারিতে কুড়াল দিয়ে কোপ মারে এবং বাসার গেইট তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তদন্ত শুরু করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে এবং সোমবার রাতে সাদকে গ্রেফতার করে।

র‌্যাব জানায়, সাদ এবং তার মা উম্মে সালমার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিল। প্রায় প্রতিদিনই ৫০০, এক হাজার টাকা হারিয়ে যাওয়ার কারণে মা ছেলের মধ্যে ঝগড়া হত। সাদ মায়ের কাছে হাত খরচের টাকা চেয়ে বারবার উত্তপ্ত হতো, যা একসময় মারাত্মক পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। ১০ নভেম্বর সকালে, আবারও টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। রেগে গিয়ে, সাদ সকালের নাস্তা না করে মায়ের ওপর আক্রমণ করে এবং তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

হত্যার পর, সাদ তার মায়ের লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে ঘটনাটি সাজানোর পরিকল্পনা করে। বাসার আলমারিতে কুড়াল দিয়ে কোপ মেরে, গেইটের তালা লাগিয়ে বাইরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর, সে ফোন করে তার বাবা আজিজুর রহমানকে জানায় যে, মাকে বাসায় পাওয়া যাচ্ছে না।

আজিজুর রহমান বাসায় ফিরে এসে খোঁজাখোঁজি শুরু করেন, কিন্তু মাকে না পেয়ে শ্বশুরবাড়ি ও প্রতিবেশীদের খবর দেন। সাদ সু-কৌশলে তার বাবা এবং দুই মামাকে ছাদসহ ঘরের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে নির্দেশ দেয়। এক পর্যায়ে, সাদ নিজেই ডিপ ফ্রিজের ঢাকনা খুলে মায়ের লাশ বের করে এবং সবার সামনে দাবি করে যে, ডাকাতরা ঘরের ভেতরে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং তদন্তে সাদ বিন আজিজুর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। সোমবার রাতে, কাহালু থানার আগোবাড়ি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর, সাদ তার মায়ের হত্যার কথা স্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে যে, টাকা নিয়ে বিরোধের কারণে সে রাগে এবং ক্ষোভে মাকে হত্যা করে।

এ ঘটনার পর পুরো এলাকা স্তম্ভিত। নিহত উম্মে সালমা খাতুন ছিলেন দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদরাসার ছাত্র ও মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। তাদের বড় ছেলে ও মেয়ে ঢাকায় বসবাস করলেও সাদ তার বাবা-মায়ের সাথে বাস করছিল। এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ এমন এক মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে একটি সন্তান জড়িত।

এখন সাদ বিন আজিজুর রহমানকে দুপচাঁচিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব আরও তদন্ত অব্যাহত রেখেছে, এবং হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তারা কাজ করছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]