সেপ্টেম্বর মাসে পেজার বিস্ফোরণে লেবাননে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৪০জনের। আহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। যা নিয়ে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল ইজরায়েলের দিকে। এবার সেই হামলার কথা স্বীকার করেলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর নির্দেশেই তৈরি করা হয়েছিল পেজার বিস্ফোরণের নকশা। এর পরই লেবাননে হেজবোল্লার সঙ্গে রক্তক্ষয়ী লড়াই শুরু হয় ইজয়ারেলি ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ)।
গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় হাজার খানেক পেজার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে লেবানন। হাতে বা পকেটে থাকা পেজার দুমদাম ফাটতে শুরু করে। একদিনের মাথায় ওয়াকি-টকি, টেলিফোন- সহ একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসেও বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। ইরানের মদতপুষ্ট সংগঠন হেজবোল্লার সদস্যদের পাশাপাশি প্রাণ যায় সাধারণ মানুষেরও। কয়েক দিন আগেই এই পেজার বিস্ফোরণ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে লেবানন। তাদের দাবি, মানবতার বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা।
এএফপি সূত্রে খবর, রবিবার নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমের দেস্ত্রি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন তাঁর সবুজ সংকেতের পরই লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ হয়। এটা একটা অভিযান ছিল।” জানা গিয়েছে, মূলত হেজবোল্লাকে টার্গেট করেই এই হামলা চালানো হয়েছিল।ওই পেজার বিস্ফোরণের পরই লেবাননে লড়াই শুরু করার ডাক দেয় তেল আভিভ। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় হেজবোল্লার শয়ে শয়ে ঘাঁটি। শুধু তাই নয়, ২৭ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলি সেনার অভিযানে নিহত হন জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরাল্লা। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর উত্তরসূরি হাশেম সাফেদ্দিনকেও খতম করে আইডিএফ।
উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধের মাঝেই গত জুলাই মাস থেকে সংঘাত তীব্র হয়েছে ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে। ইজরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির এক ফুটবল স্টেডিয়ামে আছড়ে পড়েছিল শিয়া জঙ্গি সংগঠনটির রকেট। হামলায় মৃত্যু হয় ১২ জনের। এই ঘটনাতেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে লেবাননে আক্রমণের ধার বাড়ায় ইহুদি দেশটির সেনা। অন্যদিকে, নাসরাল্লার মৃত্যু নিয়ে ইজরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ায় ইরান। হামলা পালটা হামলায় উত্তেজনা বাড়ে দুদেশের মধ্যে।