বন্ধুকে হত্যায় কলেজছাত্রের যাবজ্জীবন কারাদন্ড


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 11-04-2022

বন্ধুকে হত্যায় কলেজছাত্রের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

সাতক্ষীরা আশাশুনিতে প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে মোবাশ্বির হোসেন (২৩) নামের এক কলেজছাত্রের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তার আরও দুবছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায় ঘোষণার সময় মোবাশ্বির হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

দণ্ডপ্রাপ্ত উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের আব্দুল মজিদ মোড়লের ছেলে মোবাশ্বির হোসেন। তিনি আশাশুনি ডিগ্রি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মামলার বিবরণে জানা যায়, শঙ্কর সরকারের ছেলে চন্দ্রশেখর সরকার ও একই গ্রামের মোবাশ্বির হোসেন ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন। শোভনালী নলকুড়া বিলে তাদের দুজনেরই পৈতৃক একটি মাছের ঘের রয়েছে। চম্পাফুল আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আশাশুনি ডিগ্রি কলেজ থেকে একসঙ্গে এসএসসি ও এইসএসসি পাস করার পর চন্দ্রশেখর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ও মোবাশ্বির হোসেন আশাশুনি ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন।

এদিকে মোবাশ্বিরের সঙ্গে একই গ্রামের ইন্দ্রানী ঘোষ ওরফে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একজন হিন্দু মেয়ের সঙ্গে একজন মুসলিম যুবকের প্রেম মেনে নিতে পারেননি চন্দ্রশেখর। তাদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডা হতো দুই বন্ধুর মধ্যে। এর ধারাবাহিকতায় চন্দ্রশেখরকে পথের কাটা ভেবে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মোবাশ্বির।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর রাতে চন্দ্রশেখরকে বাড়ির পাশের একটি ঘেরে ডেকে নিয়ে যান মোবাশ্বির। সেখানে পাপিয়াকে নিয়ে কথা উঠলে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে চন্দ্রশেখরকে মারধর করতে থাকেন মোবাশ্বির। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘেরের পানির মধ্যে ফেলে দিয়ে আত্মগোপন করেন মোবাশ্বির। পরের দিন ওই ঘের থেকে চন্দ্রশেখরের মরদেহ উদ্ধার করে আশাশুনি থানা পুলিশ।

২০ অক্টোবর নিহতের বাবা শঙ্কর সরকার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওইদিন রাতে সাতক্ষীরার একটি বাসা থেকে মোবাশ্বিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান। পাপিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে বন্ধু চন্দ্রশেখরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যান মোবাশ্বির।

এদিকে গত বছরের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম কবীর মোবাশ্বির হোসেনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও ১৪ জন সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে মোবাশ্বিরের বিরুদ্ধে হত্যার পর মরদেহ গুম করার অভিযোগে প্রমাণিত হয়। তবে বয়স বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বলেন, ঘটনার সময় আসামির বয়স ছিল মাত্র ২১। বয়স বিবেচনায় তাকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি।

রাজশাহীর সময়/এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]