দেবরকে বেঁধে মা-মেয়েকে গণধর্ষণ


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 30-10-2024

দেবরকে বেঁধে মা-মেয়েকে গণধর্ষণ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মা-মেয়েকে গণধর্ষণের অভিযোগে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার ২ আসামি গ্রেফতার হলেও অন্যরা গ্রেফতার হয়নি। সব আসামি বিএনপি সমর্থিত যুবদলের নেতা।

সোমবার মেডিকেল পরীক্ষায় ভিকটিমদের শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে মেডিকেল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

একই দিন বিকালে নোয়াখালীর জুডিশিয়াল আদালতের সিনিয়র হাকিমের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দিতে ভিকটিম মা ও মেয়ে সব আসামির নাম উল্লেখ করেন এবং নির্যাতনের বর্ণনা দেয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জবানবন্দি শেষে আদালতের বারান্দায় ভিকটিম মা সাংবাদিকদের জানান, ধর্ষকরা সবাই বিএনপি দল করে। তারা আমাদের এ অত্যাচার করার পর হুমকি দিয়ে যায়। তারা বলেন- বিএনপি ক্ষমতায় মামলা করলে বা কাউকে কিছু বললে, আমাদের মেরে এলাকা ছাড়া করবে। আজও তাদের পক্ষে অনেক বিএনপির লোক হাসপাতালে ও আদালতে আমাদের হুমকি দিয়েছেন।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার রাতে উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের দুর্গম চরে এ ঘটনা ঘটে। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চরএলাহী ইউনিয়নের চরবালুয়া গ্রামের হানিফ চৌকিদারের ছেলে মো. হারুন (৪০) ও একই গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে মো. হাসান (৩৮)।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার নারীর (৩৫) স্বামী চট্টগ্রামে গাড়ি চালান। উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের এক দুর্গম চরে ওই নারী তার এক ডিভোর্সি মেয়েকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তার এক দূর-সম্পর্কের দেবর প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাশেদ, সাইফুল, হাসান, হারুন, রাজু ও ইব্রাহিম তাদের মা-মেয়েকে সন্দেহ করতেন। গত রোববার রাত ১১টার দিকে ৬ যুবক ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে ঢুকেন। একপর্যায়ে তারা ঘরের দরজা খুলে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা ওই নারীর দূর-সম্পর্কের দেবরকে (২১) বেঁধে তাকে ও তার মেয়েকে (২০) ঘর থেকে বাহিরে নিয়ে যান। 

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, যুবকদের মধ্যে তিনজন তাকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির পুকুর পাড়ে নেন এবং অন্যরা তার মেয়েকে বসতঘরের পাশের রান্নাঘরের সামনে নিয়ে যান। সেখানে রাত ৩টা পর্যন্ত পালাক্রমে ওই যুবকেরা তাদের ধর্ষণ করেন। যাওয়ার সময় টাকাসহ ঘরের জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যান। ঘটনাটি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে যান। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহিম তোতা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আমি জড়িত নই। গত কিছু দিন আগে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমার বাবা আব্দুল মতিন তোতাকে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকে রাজ্জাক বাহিনী আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করেন। নির্যাতিত নারী রাজ্জাক চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয়। মূলত আমার বাবার হত্যা মামলাকে চাপা দিতে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিহিংসামূলক আমার নাম জড়িয়ে দেয়। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। একইসঙ্গে আমি অপরাধী হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মাথা পেতে নেব।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা নেওয়া হয়েছে। ২ আসামিকে গ্রেফতার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। নির্যাতিতদের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে। টেস্টে মা ও মেয়ে দুই ভিকটিমের শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সূত্র: যুগান্তর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]