ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে ঠাণ্ডা, জ্বর, সর্দি-কাশি, বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা


কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 29-10-2024

ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে ঠাণ্ডা, জ্বর, সর্দি-কাশি, বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হঠাৎ করেই শিশুদের নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগের মারাত্মক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে শিশুরা ঠাণ্ডা, জ্বর ও সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় শতাধিক শিশু ও বৃদ্ধ নিউমোনিয়া কিংবা জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

৫০ শয্যাবিশিষ্ট ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে অধিক শিশুসহ বৃদ্ধরা ভর্তি হওয়ায় বেড়েছে রোগীর চাপ। শয্যা সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে রোগীকে নিয়ে মেঝেতে বিছানা পেরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বিগত প্রায় এক মাস ধরে হাসপাতালে এই অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের।

কয়েকদিন ধরে ৪ বছর বয়সী সুমাইয়ার গায়ে জ্বর, রয়েছে শ্বাসকষ্ট। গ্রাম্য চিকিৎসককে দেখিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তার পরিবার। কিন্তু কোনো উন্নতি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ছুঁটে এসেছেন। সুমাইয়ার মতো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত শিশুর প্রায় একই অবস্থা।

সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডের বিছানাসহ মেঝে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীতে ঠাসা। বিছানা সংকটে গাদাগাদি করে সেখানে বিছানা করে রোগীদের রাখা হয়েছে। এছাড়াও বহির্বিভাগে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। টিকিট দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বরতদের। প্রতিদিন অর্ধসহস্র রোগী বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফিরছেন।  এছাড়াও জরুরি বিভাগেও নানান রোগসহ সমস্যা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে অনেকে। 

উপজেলার আলাদীপুর ভিমলপুর গ্রামের লাকী আক্তার তার তিন বছর বয়সি মেয়ে মিতিয়া মৌকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ক'দিন ধরে জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ মিতিয়া মৌ।

স্কুল শিক্ষিকা পাপিয়া চক্রবর্তী। এক ছেলে ও এক মেয়ে জননী তিনি। তিন বছর বয়সী শিশু ছেলে অর্জন কিছুদিন থেকে জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত। বর্তমানে তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে অথৈও আক্রান্ত। এছাড়াও বাড়ির প্রায় সকলে ঠাণ্ডাজনিত রোগী আক্রান্ত।

পাপিয়া চক্রবর্তী বলেন, কদিন থেকে বাচ্চাদের জ্বর-সর্দি। স্কুল ছুটি নিয়েছি, তাদেরকে ডাক্তার দেখানোর জন্য। ডাক্তার দেখিয়ে বর্তমানে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে অক্সিজেন নিতে দেখা যায় সত্তোর্ধ আবুল মিয়াকে। তার স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আবুল মিয়া বেশ কয়েকদিন যাবৎ জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত। গত সোমবার রাত থেকে শ্বাস কষ্টে ভুগছেন তিনি। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। অক্সিজেন নিয়ে অনেক ভালো অনুভব করছেন বৃদ্ধ আবুল মিয়া।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫০ শর্য্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে বরাবরই রোগীর চাপ অনেক। ফুলবাড়ীসহ নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর ও চিরিরবন্দরের মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন এই হাসপাতালে। একে তো চিকিৎসকসহ স্টাফ সংকট, তার ওপর বর্তমানে ঠাণ্ডাজনিত রোগীদের উপচে পড়া চাপ।

সিনিয়র স্টাফ নার্স তিলোত্তমা ব্যানার্জি জানান, গত দুই সপ্তাহ যাবত শিশু ও বৃদ্ধ রোগী ভর্তির হার অনেক বেশি। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নূর-ই-আলম খুশরোজ আহমেদ বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শিশুসহ বৃদ্ধদের ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় শুরু হয়। তবে এবার অক্টোবর মাসের শুরু থেকে হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে শিশুসহ বৃদ্ধরা বেশি এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]