ফ্যাসিবাদের দোসর গুজব রটনাকারীদের মুখে চুনকালি দিয়ে আজ ব্যস্ততম একটি দিন পার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার একাধিক বৈঠকসহ পুরদোমে অফিস করেন তিনি। এরমধ্য দিয়ে আরেকবার হোঁচট খেল নানারূপে ফিরতে চাওয়া পতিত স্বৈরাচার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া এদিন এই বৈঠকের পাশাপাশি স্বতোস্ফূর্তভাবে অন্যান্য দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করেন তিনি।
ফ্যাসিবাদের দোসররা গেল কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে গুজবের ডালপালা বিস্তার করছিল। তার অসুস্থতা ও দাপ্তরিক কাজে অনুপস্থিত থাকা নানা বিষয় নিয়ে কাল্পনিক খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছিল পলাতক গোষ্ঠীটি। অবশেষে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে প্রাণবন্ত একটি দিন পার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
নেটিজেনরা বলছেন, পতিত স্বৈরাচার অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে কিংবা সংশোধনমূলক রাজনীতির মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে নিজেদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকলো। সামনে প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে সমালোচনা করার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেললো গুম-খুন, লুটপাট ও গণহত্যার দোসররা।
প্রধান উপদেষ্টা দাঢিত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা গুজব ও বিভ্রান্ত ছড়িয়ে ব্যর্থ হয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ। তাদের এই গুজব প্রতিরোধে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়, গুজব প্রতিরোধে ফ্যাক্ট-চেকিং ফেসবুক পেজ চালু করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এতে সবাইকে যুক্ত হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়।
গুজব প্রতিরোধে নেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা। তারা কঠোরভাবে গুজব প্রতিরোধে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান।
ফেসবুকে শাহাদাত লিখেছেন, চমৎকার কাজ হয়েছে, যারা গুজব বা মনগড়া কথা ফেইসবুকে বা অনলাইনে লিখে পোষ্ট দেয় তাদের জন্য এবার ঘুম হারাম হবে! আমাদের কাজ হচ্ছে এমন পোষ্ট দেখা মাত্র তা স্ক্রিনসট নিয়ে বা লিঙ্ক এই ফ্যাক্টচেকে মেসেজ করে জানিয়ে দেয়া, ব্যস, কাজ হয়ে যাবে! অনেকদিন পরে ভাল বুদ্ধি বের হল! যে এই বুদ্ধি বের করছে উনাকে ধন্যবাদ, এতে জনগণ অনেক ফালতু বা নানান গুজব থেকে রক্ষা পাবে, সাথে যারা এমন করে যাচ্ছে তাদের আইডি শেষ হবে, আর মামলা শাস্তি তো হতেই পারে! ফেক আইডি গুলো এবার ঠেলা বুঝবে, ইচ্ছা করে যারা এমন বিভ্রান্তি করে তাদের বুক কাঁপবেই! রেফারেন্স বা সুত্র না জেনে ফটো বা ভুল কিছু শেয়ার করার ক্ষেত্রেও সবাই সতর্ক হবে। ওয়েল ডান, একদম কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা!
জেএইচ নাহিদ লিখেছেন, খুবই ভালো উদ্দ্যোগ। তবে এর পাশাপাশি যারা অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এবং দেশকে অস্থির করার উদ্দেশ্য নানা অপপ্রচার ছড়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার একটা পদ্ধতি থাকা উচিত। তবে যারা দেশ গঠনে গঠনমূলক সমালোচনা করবে নানা ভুল ধরিয়ে দিবে তারা থাকবে সম্পূর্ণ নিরাপদ।
ইঞ্জি. সুমন লিখেছেন, ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করে বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারিগণের জন্য এনআইডি বাধ্যতামুলক করে, এনআইডি ভেরিফাইড কোন সাইন বহন করতে পারে। তারপর যারা ফেক/ গুজব ছড়াবে তাদের এনআইডি স্কোর রাঙ্কিং করে জাতীয় বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্ছিত করতে হবে। এখানে আইসিটি মন্ত্রাণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় একটি কুচক্রী মহল ওয়াশিংটন পোস্টের নামে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে একটি ভুয়া প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংকে নিশ্চিত করেছে যে প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সবাইকে কোনো ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।