সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাদেশটির উদ্যোক্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে এতে অনুমোদন দেওয়া হয়। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সব ক্যাডারের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারিত হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতাবহির্ভূত সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারিত হবে। স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা প্রয়োজনীয় অভিযোজন-সাপেক্ষে প্রযোজ্য হবে। তবে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা বহাল থাকবে।
এ অধ্যাদেশের আলোকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এর ৫৯ ধারায় দেওয়া ক্ষমতাবলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪’ পুনর্গঠনপূর্বক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনবার অবতীর্ণ হতে পারবেন- এরূপ বিধি সংযোজন করবে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বর্তমানে ৩০ বছর। এটি ৩৫ করার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। আগের আওয়ামী লীগ সরকার সে দাবি একাধিকবার নাকচ করে।
শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে সেই দাবি ফের জোরালো হয়। ৩৫ প্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনেও আন্দোলন করেন। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আন্দোলনকারীদের দাবি পর্যালোচনা কমিটির প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী চাকরিতে প্রবেশে পুরুষের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও নারীর ৩৭ বছর করার সুপারিশ করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেন।
গত সোমবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করে প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শাহবাগে ‘অনশন’ কর্মসূচি শুরু করেন কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশী। পরে বুধবার তারা অনশন ভাঙেন।
এদিন আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মো. হারুন বলেন, পরে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩৫ বাস্তবায়নে অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেব। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ করার সিদ্ধান্ত এলো।