নওগাঁয় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 11-04-2022

নওগাঁয় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

নওগাঁর মান্দায় এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বুধবারের হলেও নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পরই বিষয়টি জানাজানি হয়।

রোববার (১০ এপ্রিল) ভোরে এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হলেন: উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লা (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী হাজেরা বিবি (৬১)।

ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন গৃহবধূ ববিতা খানমের স্বামী জাহিদ হোসেন মোল্লা (৩২)। নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ ববিতাকে রোববার (১০ এপ্রিল) ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ, তাঁর স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ৭ মাস আগে নওগাঁ সদর উপজেলা তেলিপুকুর হঠাৎপাড়া গ্রামের মর্জিনা বিবির মেয়ে ববিতা খানমের সঙ্গে মান্দা উপজেলার গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লার ছেলে জাহিদ হোসেন মোল্লার বিয়ে হয়। ববিতা জাহিদ হোসেনের তৃতীয় স্ত্রী। জাহিদ বিভিন্ন হাট-বাজারে ছাগলের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ আগের দুই স্ত্রীও জাহিদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে তালাক নিয়ে চলে যান। ববিতার সঙ্গে বিয়ের সময় তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকও নেন জাহিদ হোসেন। এরপরেও ববিতার কাছে আরও যৌতুক দাবি করেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন বাহানায় ববিতাকে নির্যাতন করে আসছেন বলেও তাঁদের অভিযোগ।

গৃহবধূর মা মর্জিনা বিবি জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। এরপরেও ববিতার ওপর নির্যাতন থামেনি। গত বুধবার দুপুরে তাঁকে মারধর শুরু করেন জাহিদ। মুঠোফোনে কেউ একজন নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ববিতাকে মাটিতে ফেলে চুলের মুঠি ধরে এলোপাথাড়ীভাবে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লাথি ও কিলঘুষি মেরে চলেছেন জাহিদ। এক পর্যায়ে তাঁর বস্ত্র ছিঁড়ে বিবস্ত্র করা হয়। প্রতিবেশি কয়েকজন ববিতাকে জাহিদের কাছ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাঁদেরকে মারতে উদ্যত হন জাহিদ। অনেক চেষ্টায় ববিতাকে জাহিদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন স্থানীয় লোকজন।

গৃহবধূ ববিতা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় তাঁর স্বামী যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমার পরিবার গরীব হওয়ায় দাবি করা যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এর ফলে অধিকাংশ সময় তাকে বাপের বাড়িতেই থাকতে হয়েছে। একই দাবিতে বুধবার তাঁর ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করতে আসেনি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে থানা পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করেন। পরে ওই গৃহবধূ শ্বশুর-শাশুড়ীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’

রাজশাহীর সময়/এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]