কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে, সেলফির ধুম


অনলাইন ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 18-10-2024

কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে, সেলফির ধুম

সুন্দরের পিপাসু যে কোনো মানুষকেই কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পুলকিত করে। কার্তিকের স্বচ্ছ নীল আকাশে সাদা মেঘের পালকে যেন কাশফুল ও দিগন্তে নয় আকাশেই ওড়ে। ইতোমধ্যে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত এলে ও মীরসরাই উপজেলার অর্থনৈতিক জোন এলাকায় মনোরম কাশফুলের দিগন্ত জোড়া বাগান কেড়ে নিচ্ছে দর্শনার্থীদের মন।

গুচ্ছ সাদা মেঘের ভেলার সঙ্গে কাশফুলের দোল খাওয়ার দৃশ্য দেখতে সেখানে দর্শনার্থীরা ভিড় করছে প্রকৃতির অপার রূপ দেখতে। আর একের পর এক সেলফির ধুম পড়েছে।

আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা আর তার নিচে কাশফুলের নাচানাচি-অজান্তেই মানুষের মনে নির্মল আনন্দ ছড়িয়ে দিচ্ছে। আকাশে ধবধবে সাদা মেঘের শতদল আর মাটিতে মৃদু বাতাসে দোল খাওয়া কাশফুল যে চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য ছড়ায় তাতে থাকে শুধুই মুগ্ধতা।

চলতি দশকে গড়ে উঠা মীরসরাই উপজেলার উপকূলাঞ্চলে ২০১৮ সালে ৩০ হাজার একর জমিতে নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক জোন এলাকায় সমুদ্র নিকটবর্তী বেশ কিছু ভরাটকৃত খালি থাকা শিল্পপ্লটে গেল বছরই পরিপূর্ণভাবে ভরাট হয়েছিল। এখানে সমুদ্র থেকে ভরাট করা পলির উপর সারি সারি কাশফুল এবছরই সবচেয়ে বেশি সুদৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।

কালের আবর্তে শরতকালের এমন চিরচেনা দৃশ্য এখন আর তেমনটি চোখে পড়ে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ কাশবন কেটে কৃষিজমি সম্প্রসারণসহ আবাসিক এলাকা গড়ে তুলছে। এতে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিকে অপরূপ শোভাদানকারী কাশফুল।

রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন গ্রন্থ ‘কুশজাতক’ কাহিনী অবলম্বন করে ‘শাপমোচন’ নৃত্যনাট্য রচনায় বলেছেন- কাশফুল মনের কালিমা দূর করে, শুভ্রতা অর্থে ভয় দূর করে শান্তির বার্তা বয়ে আনে। শুভকাজে কাশফুলের পাতা বা ফুল ব্যবহার করা হয়। আবার অন্য প্রায় সব কবি লেখকের লেখায় গানে কাশফুল আর মেঘের ভেলা যেন অনন্য শরৎ কথন সর্বত্র।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, কাশফুল এক ধরনের ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। এরা উচ্চতায় তিন মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নদীর তীরে জন্মানো শ্বেতশুভ্র কাশবন দেখতে খুবই সুন্দর। বাংলাদেশের ঋতুরীতি অনুযায়ী শরতের শোভা কাশফুল। এ ফুল ফুটতে দেখেই বোঝা যায় এটা শরৎকাল।

তিনি বলেন, কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু ঢিবিতে কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হলো নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে।

বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায়। কাশফুল পালকের মতো নরম এবং ধবধবে সাদা। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ খুবই ধারালো।

তিনি বলেন, কাশফুলের বেশকিছু ঔষধি গুণ রয়েছে। যেমন-পিত্তথলিতে পাথর হলে নিয়মিত গাছের মূলসহ অন্যান্য উপাদান দিয়ে ওষুধ তৈরি করে পান করলে পিত্তথলির পাথর দূর হয়। কাশমূল বেটে চন্দনের মতো নিয়মিত গায়ে মাখলে দুর্গন্ধ দূর হয়। কাশফুলের অন্য একটি প্রজাতির নাম কুশ। এরা দেখতে প্রায় কাশফুলের মতোই। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘পুরাণ’-এ কুশের স্থান খুব উঁচুতে। চর্মজাতীয় রোগের চিকিৎসায়ও কাশফুল বেশ উপকারী বলেও তিনি জানান।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]