আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি রাখতে পারে বাংলাদেশ


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 11-10-2024

আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি রাখতে পারে বাংলাদেশ

ভারতের বেসরকারি সংস্থা ‘আদানি পাওয়ার’ ও আরও কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থার বাংলাদেশের কাছে মোট বকেয়ার পরিমাণ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই আর এই অর্থের কিছুটা অন্তত এখনই পরিশোধ না-করা গেলে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে এমন উদ্বেগকে পাশে রেখে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি রাখতে পারে বাংলাদেশ। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তিগুলো কতটুকু যৌক্তিক এবং জাতির স্বার্থের কথা কতটুকু চিন্তা করেছে তা খতিয়ে দেখতে একটি প্যানেল নিয়োগ দিয়েছে ড. ইউনূসের অন্তবর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে দ্রুত আইনের অধীনে যে প্রকল্পগুলো শুরু করা হয়েছিল সেগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রকল্পগুলোও ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত তাদের যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে থাকে, সেখান থেকে সরবরাহ এর মধ্যেই অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির পার্থক্য হচ্ছে, পিডিবি চাইলেও এই ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াটের ৩৪ শতাংশের নিচে বিদ্যুৎ কিনতে পারবে না এখান থেকে। প্রয়োজন না থাকলেও ৩৪ ভাগ বিদ্যুৎ কিনতে হবে। আর তা না কিনলেও ওই পরিমাণ বিদ্যুতের জন্য আদানিকে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হবে।

চুক্তিতে আরও বলা আছে, প্রতি চার মাসের ডিমান্ড একবারে দিতে হবে। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পিডিবি কী পরিমাণ বিদ্যুৎ নেবে, তার একটি ডিমান্ড ডিসেম্বরেই দিতে হবে। কোনও কারণে পিডিবি বিদ্যুৎ না নিলেও আমদানি করা কয়লার দাম পিডিবি পরিশোধ করবে।

সূত্র জানিয়েছে চুক্তি বাতিল নাও হতে পারে। তাদের ভাষ্যমতে বিকল্প শুল্ক কমানোর জন্য একটি পারস্পরিক চুক্তি হতে পারে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান বলেন, ‘কমিটি বর্তমানে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে, এবং এখনো মন্তব্য করার সঠিক সময় আসেনি।’

বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের একজন কর্মকর্তা ২০২৩/২৪ আর্থ বছরের সর্বশেষ অডিট রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, আদানি পাওয়ারের বাংলাদেশে প্রতি ইউনিট প্রায় ১২ টাকা ($০.১০০৮) খরচ হয়। যা ভারতের অন্যান্য বেসরকারী উৎপাদকদের হারের তুলনায় ২৭% বেশি এবং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্লান্টের তুলনায় ৬৩% বেশি।

বিগত চুক্তির অধীনে, বাংলাদেশ ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আদানি এবং অন্যান্য ভারতীয় প্ল্যান্ট থেকে প্রায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।

এদিকে ভারতের একজন মুখপাত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ চুক্তিটি পর্যালোচনা করলেও এ বিষয়ে আদানির কোন ইঙ্গিত নেই। তিনি বলেন, ‘বকেয়া বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি, যা উদ্বেগের বিষয়।’

রয়টার্স প্রতিবেদনে জানায়, অর্থ প্রদানের জন্য ডলার অ্যাক্সেস করতে অসুবিধার কারণে ৮০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার পরিশোধ করতে বেশ ধকল পোহাচ্ছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলির কাছে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাওনা রয়েছে।

এ বিষয়ে আদানি মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ক্রমাগত সংলাপ করেছি, আমাদের বকেয়া শীঘ্রই পরিশোধ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।’

মুখপাত্র আরও বলেন, আদানি পাওয়ার আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, আদানি যেমন তার চুক্তির শর্তাবলী পূরণ করেছে তেমনি বাংলদেশও তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। তবে কেন এর হার অন্যান্য সরবরাহকারীদের চেয়ে বেশি এমন প্রশ্ন করলে তার কোনো উত্তর দেননি তিনি।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]