ইসলামে সালামের গুরুত্ব


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 27-09-2024

ইসলামে সালামের গুরুত্ব

ইসলামে সালাম অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুল (সা.) বেশি বেশি সালাম দিতে উৎসাহিত করে বলেছেন সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সা.) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আপনারা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে আপনারা মুমিন হতে পারবেন না। আমি আপনাদের এমন কাজের কথা বলছি যা আপনাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম আদান-প্রদান করুন! (সহিহ মুসলিম: ২০৩)

মানুষ সৃষ্টির পরপরই আল্লাহ তাআলা তাকে সালামের সৌজন্য শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষের মধ্যে প্রথম সালাম দিয়েছিলেন প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করলেন। এরপর তাকে বললেন, যাও, ফেরেশতাদের সালাম দাও। উত্তরে তারা তোমাকে কী বলে তা ভালো করে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের অভিবাদন।

আদম (আ.) ফেলেশতাদের কাছে গিয়ে তাদের সালাম দিলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। উত্তরে ফেরেশতারা বললেন, ‘আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’ অর্থাৎ আপনার ওপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। ফেরেশতারা ‘ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর রহমতও বর্ষিত হোক’ বৃদ্ধি করলেন। (সহিহ বুখারি: ৬২২৭)

সালামে দোয়া বৃদ্ধি করলে আল্লাহ তাআলা সওয়াবও বৃদ্ধি করে দেন। আবু হোরায়রা (সা.) বলেন, একদিন আল্লাহর রাসুল (সা.) বসেছিলেন, এক ব্যক্তি এসে বললো, ‘সালামুন আলাইকুম’ তিনি বললেন, দশ নেকি। দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে বললো, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ তিনি বললেন, বিশ নেকি। তৃতীয় ব্যক্তি এসে বললো, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ত্রিশ নেকি। (সহিহ ইবনে হিব্বান)

তবে এর বেশি বৃদ্ধি করা ঠিক নয়। বিভিন্ন হাদিসে সালামের সবচেয়ে ছোট সংক্ষীপ্ত রূপ ‘আসসালামু আলাইকুম’ এবং সবচেয়ে দীর্ঘ রূপ ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ বর্ণিত হয়েছে। অনেকে ‘ওয়া মাগফেরাতুহু’ ‘ওয়া জান্নাতুহু’ ইত্যাদি বৃদ্ধি করেন। এভাবে সালাম দেওয়ার প্রচলন নবিজি (সা.) বা সাহাবিদের মধ্যে ছিল না। তাই এভাবে সালাম বৃদ্ধি করা ঠিক নয়।

সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করে। আল্লাহর রাসুল (সা.) সালামের প্রচলনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। মদিনায় হিজরতের পরপর মদিনবাসীকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যে আমলগুলোর কথা নবিজি (সা.) বলেছিলেন সালামের প্রচলনও তাতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। মদিনার তৎকালীন ইহুদি সম্প্রদায়ের একজন বড় রাব্বি বা ধর্মগুরু পরবর্তীতে সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় এলেন, লোকেরা তাকে দেখার জন্য ছুটে যাচ্ছিল এবং বলছিল, ‘আল্লাহর রাসূল এসেছেন!’ ‘আল্লাহর রাসূল এসেছেন!’

আমিও সবার সাথে তাকে দেখতে গেলাম। তার চেহারা ভালোভাবে দেখে আমি বুঝতে পারলাম, এটা মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়। সর্বপ্রথম তার মুখে আমি যা শুনেছিলাম, তিনি বলেছিলেন, ‘লোকসকল! তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন করো, খাবার খাওয়াও, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করো এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন নামাজ আদায় করো, তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজা)


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]