ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবর্ষণ করে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি শাহ আলম প্রকাশ লাল শাহ আলম’কে ফেনীর কালিদহ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট ১০টায় ফেনী জেলার মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছাত্র জনতার সাথে ভিকটিম বারইয়ারহাট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাইদুল ইসলাম (২০) অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ফেনী সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের প্ররোচনায় ও নির্দেশে অপরাপর কতিপয় আসামি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ভিকটিম ছাইদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ ভয়ে দৌঁড়ে মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণ দিকে চলে যায় এবং একপর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য স্টার লাইন কাউন্টার সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে ফ্লাইওভারের উপরে উঠে শুয়ে পড়ে। আসামিগণ ফ্লাইওভারের উপরে উঠে ভিকটিম ছাইদুল ইসলাম এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৪-১৬টি গুলি করায় ভিকটিম আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামীরা পুনরায় ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি-সোঠা, লোহার রড, রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা এবং ছাত্র-জনতা ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় ৯৪ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৫, তারিখ-১৪ আগস্ট ২০২৪ ইং, ধারা- ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০৭/ ৩০২/১১৪/৩৪, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি শাহ আলম প্রকাশ লাল শাহ আলম ফেনী জেলার কালিদহ ইউনিয়নের পশ্চিম সিলোনিয়া গ্রামে নিজ বাসস্থানে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ১৭৫০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি শাহ আলম প্রকাশ লাল শাহ আলম (৫০), পিতা- ছৈয়দের রহমান, সাং- লালপোল, থানা- ফেনী সদর, জেলা- ফেনী'কে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে বর্ণিত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিকট থেকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে জানায়। আসামির পিসিপিআর যাচাই করে তার বিরুদ্ধে আরো সাতটি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে তাকে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।