প্রশাসনের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভাঙার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন


কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 24-09-2024

প্রশাসনের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভাঙার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ভাঙার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিভাবে নেতৃত্ব দিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীর ভাঙতে পারেন? সে জবাব চেয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

এদিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রাচীর পুনর্নিমাণসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারীও  দেন তারা।

সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে শিবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিক্ষোভ করা হয়। বিক্ষোভ শেষে পরিষদ কার্যালয়ের সম্মুখে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ শিক্ষক নেতারা।

মানবববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এসকে মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, শিবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. কাওছার জাহানসহ শিক্ষক সমিতির ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম বলেন, গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে বিদ্যালয়টির প্রাচীর ভাঙা হয়। ওইদিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. কাওছার জাহান ছুটিতে ছিলেন। বিষয়টি আমরা জানতে পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমানের কাছে সীমানাপ্রাচীর কেনো বা কি কারণে ভাঙা হচ্ছে এ বিষয়টি আমরা জানতে চাইলে তারা কোনো সদোত্তর দিতে পারেন’নি। আমরা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা প্রশাসনকে বাঁধা প্রদান করে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। পরে প্রশাসন পিছু হটে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়টির সীমানাপ্রাচীর নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জটিলতা ছিল কিন্তু বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বেই তৎকালীন সীমানাপ্রাচীরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কোন অশুভ শক্তি বা কার প্ররোচনায় নির্মিত সীমানাপ্রাচীর কেউ ভাঙতে পারে। বিদ্যালয়টির জমি বিষয়ে জজ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। জাতির কাছে আমাদের প্রশ্ন নির্মিত সীমানাপ্রাচীর ইউএনও ভাঙতে পারেন কি-না। তিনি কিভাবে নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীর ভাঙতে পারেন সে জবাব আমরা শিক্ষক সংগঠন ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চাই। সীমানাপ্রাচীরটি পুনর্নিমাণসহ সীমানার মধ্যে থাকা অবৈধ স্থাপনা অপসরণের দাবি জানাই। আগামী ৭ দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে এলাকাবাসীর সমন্বয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. কাওছার জাহান বলেন, গত সোমবার আমি ছুটিতে ছিলাম। পরে জানতে পারি প্রশাসনের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভাঙা হচ্ছে। বিষয়টি আমি শিক্ষক সমিতিকে অবগত করে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে ছুটে যাই এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলি। বিদ্যালয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে গুটি কয়েকজন ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে।  বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে স্থানীয় বাসিন্দা আজিজার রহমান বিদ্যালয়ের নামে এক একর জমি দান করেন। যার খতিয়ান নং-১৪৪৪ ও দাগ নং-১২৯৪। কিন্তু আজিজার রহমানের ওয়ারিশ খন্দকার মো. রিয়াসত মাষ্টার বিদ্যালয়ের সামনে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেন। বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য টেন্ডার হলে ঠিকাদার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু করতে যান। তখন কাজে বাঁধা প্রদান করেন খন্দকার মো. রিয়াসত মাষ্টার। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও স্থানীয়দের চাপের মুখে পিছু হটেন খন্দকার মো. রিয়াসত মাষ্টার। কিন্তু বর্তমানে সেই প্রশাসনের নেতৃত্বেই নির্মিত সীমানাপ্রাচীর ভাঙা হচ্ছে। মামলা চলমান কেনো রায় হয়নি এখনো তবুও কিভাবে রায়ের আগে ভাঙা হলো বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর? আমরা দ্রুত সীমানাপ্রাচীর পুনর্নিমাণসহ অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদের জোর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমালের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিতি বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে তা আমি জানি না।

বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভাঙার অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সীমানাপ্রাচীর ভাঙা হয়নি। বিদ্যালয়ের সীমানার জায়গা নিয়ে এক ব্যক্তির সাথে বিদ্যালয়ের ঝামেলা আছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছে। বসে কাগজপত্র দেখে সমাধান করা হবে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]