ভোলা জেলা সদরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মহিমা খাতুন (৫০) নামে সাপে কাটা এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ভোলা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই নারী। তিনি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার কলমি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরকলমি গ্রামের ওবায়েদুল কামালের স্ত্রী।
নিহতের স্বামী ওবায়েদুল কামাল বলেন, আমার স্ত্রী গতকাল (শনিবার) রাতে আমার বসতঘরে সাপের ছোবলে বিষে আক্রান্ত হন। আমি বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রাতে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।
তিনি আরও বলেন, ভর্তি করানোর পর ডাক্তার রক্ত টেস্ট করাইতে বলে, আমি টেস্ট করাই। এরমধ্যেই দেখি আমার স্ত্রী বমি করতেছেন। আমি ডাক্তারের কাছে রাতে কয়েকবার গিয়ে বলেছি, স্যার আমার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হচ্ছে না, তিনি কোনো চিকিৎসা দিলেন না। ডাক্তার উলটো আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেছেন। তিনি আমার কোনো কথাই শুনলেন না। তিনি বলেন, ‘ডাক্তার আমি না আপনি?’ পরে আজ (রোববার) সকালে আমার স্ত্রী মারা গেছেন। আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই, এভাবে ডাক্তারের অবহেলায় আর কারো স্ত্রী যেন মারা না যান।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আমার স্ত্রীকে সাপের অ্যান্টিভেনম দেননি। যার কারণে তিনি মারা গেছেন।
ডাক্তারের অবহেলায় ওই সাপে কাটা নারী মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ আবু আহমেদ সাফির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় সাপে কাটা এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছি। আমি বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে এ অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার দিবাগত রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তার চিকিৎসা দিয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিউটিতে অনেকেই ছিলেন, তদন্তে জানা যাবে।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, সাপে কাটার ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে মৃত মহিমা খাতুনের মরদেহের সুরাতাল রিপোর্ট সম্পূর্ণ করেছি।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. এনামুন হক বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু এখনো জানাননি, আমি খোঁজ নিচ্ছি।