বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত মো. পারভেজ ৩৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন।
গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় মিরপুর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন পারভেজ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কফিল উদ্দিন।
পারভেজ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউপি‘র ধন্যপুর গ্রামের মিন্নত হাজী বাড়ির নবী উল্যার বড় ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি থাই গ্লাসের দোকানে কাজ করত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি মিরপুর এলাকায় ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন পারভেজের বাবা একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা। সন্তানের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে শুধু সবার দিকে নিরবে তাকিয়ে থাকে। পাঁচ ভাই বোন, সবাই একমাত্র পারভেজের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
পারভেজের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা মানিক আমাকে ছেড়ে চলে গেল। এখন আমি আমার অন্য ছেলে মেয়ে এবং তার মানসিক ভারসাম্যহীন বাবাকে নিয়ে কি করব? আমার পারভেজই শুধু ইনকাম করতো। যারা আমার ছেলেকে মেরেছে আমি সরকারের কাছে এর বিচার চাই।’
প্রসঙ্গত, গত জুলাইতে আরম্ভ হওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পারভেজ শুরু থেকেই অংশগ্রহণ করে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। আন্দোলনের শেষের দিকে ৫ আগষ্ট পারভেজ মিরপুরে ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেয়। আন্দোলন ধমাতে তৎকালীন সরকারের দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে পারভেজ গুরুতরভাবে আহত হয়। পরে উপস্থিত ছাত্র জনতা তাকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎকার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং সেখানে বৃহস্পতিবার ভোরে পারভেজ মারা যায়। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের ধন্যপুর গ্রামের পারিবারিক করবস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, পারভেজের মারা যাওয়ার খবরটি পেয়েছি। আমি সাথে সাথে স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বারকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়েছি খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য।