বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম ১ নং ইউনিট চালু


কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 13-09-2024

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম ১ নং ইউনিট চালু

যান্ত্রিকক্রুটির কারণে ৬ দিন বন্ধ থাকার পর মেরামত শেষে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু হয়েছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নং ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম। ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াটের হলেও তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট। যা যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

চীন থেকে অয়েল পাম্প (টারবাইন জেনারেল) এলেই চালু হবে ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম ৩ নং ইউনিটটি। সেটি চালু হলে কমে যাবে বিদ্যুতের ঘাটতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তিন ইউনিটের ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও সিংহভাগ সময়ে শুধু দুইটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কিন্তু ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম ২ নং ইউনিট ২০২০ সালের নভেম্বরে বন্ধ হয়। এদিকে গত জুলাই মাসের শেষদিকে বন্ধ হয়ে যায়  ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নং ইউনিটের উৎপাদন। এই ইউনিট’টি থেকে ১৯০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। পরে শুধু ১ নং ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম চালু ছিল। এদিকে  ১ মাস ৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর উৎপাদন শুরু হয় ৩ নং ইউনিট থেকে। অপরদিকে সংস্কার কাজের জন্য বন্ধ করা হয় ১ নম্বর ইউনিটটি। কিন্তু যান্ত্রিকক্রটির কারণে চালুর দুইদিন পরেই ৩ নং ইউনিটটি গত ৯ সেপ্টেম্বর ফের বন্ধ হয়ে যায়। এতে পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটির ৩টি ইউনিটই। ফলে পুরোপুরি বন্ধ ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন। ফলে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রংপুর বিভাগের ৮ জেলা পড়ে চরম লোডশেডিংয়ের কবলে।

আরো জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কার্যক্রম চুক্তিভিত্তিক পরিচালনা করেন চীনা ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। তারা ৫ বছর মেয়াদি, আগামী বছর শেষ হবে তাদের চুক্তির মেয়াদ। চুক্তি মোতাবেক উৎপাদন সচল রাখতে মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও তা করেনি ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠানটি। ফলে বারবার ক্রুটি দেখা দিচ্ছে।

কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎটি পুরোপুরি নির্ভরশীল কয়লাখনির কয়লা উৎপাদনের ওপর। বর্তমানে কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা মজুত আছে। খনি থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ মেট্রিকটন কয়লা সরবরাহ করা হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন কয়লা প্রয়োজন। তবে কখনোই একসাথে চালু রাখা সম্ভব হয়নি তিনটি ইউনিট।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিটি ইউনিটে দুটি করে অয়েল পাম্প (টারবাইন জেনারেল) থাকে। সেটি তেল সরবরাহের মাধ্যমে জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। ৩নং ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি অয়েল পাম্প (টারবাইন জেনারেল) ২০২২ সালের অক্টোবরে বিকল হয়ে যায়। রির্জাভে থাকা অপর অয়েল পাম্পটিও গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকল হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ৩ নং ইউনিট। ১ নং ইউনিটটি বেশ পুরোনো হওয়ায় ৩ নং ইউনিটটি চালু করা হলে, গত ৬ সেপ্টেম্বর মেরামতের জন্য বন্ধ রাখা হয় ১ নং ইউনিটটি। ৩ নং ইউনিটটি বন্ধ হওয়ায় ফের মেরামত শেষে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা ৩২ মিনিটে ১ নং ইউনিটটি চালু করা হয়েছে। ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াটের হলেও তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট। যা যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তারা দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। চীন থেকে অয়েল পাম্প (টারবাইন জেনারেল) এলেই ৩ নং ইউনিটটি চালু হবে। সেটি চালু হলে বিদ্যুতের ঘাটতি কমে যাবে।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পার্শ্বে ২০০৬ সালে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যায়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চীনা কারিগরি সহায়তায় স্থাপন করা হয়।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]