বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আলী রায়হানের কবর জিয়ারত করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। পরে তিনি শহীদ আলী রায়হানের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন ও সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নেন।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ৩টায় পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মঙ্গলপাড়া এলাকায় আসেন ছাত্রশিবির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবির সব সময় যেকোনো সংস্কারের পক্ষে। ইসলামী ছাত্রশিবির এমন একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র কামনা করে যেটা সকলের জন্য আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে গঠন হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসবই প্রতিফলিত হয়। ছাত্রশিবিরের যারা কর্মী হয় তারা দক্ষ এবং যোগ্য হয় এবং দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে তৈরি হয়। রাষ্ট্র সংস্কারে ছাত্রশিবিরের এই কার্যক্রম অন্যতম একটি প্রচেষ্টারই অংশ। আমরা আগামী দিনে এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেটা স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল এই রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিপরীত সকলের জন্য কল্যাণকর একটি রাষ্ট্র হবে। সেই পরিকল্পনা হিসেবে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ শিক্ষার পরিবেশ থাকে সেটার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবির কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের পাশে আমরা ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। শহীদ পরিবারদের নিয়ে আমাদের বেশ কিছু পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি রয়েছে যেগুলো এই মুহূর্তে প্রচার করতে চাচ্ছি না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে যারা আহত, পঙ্গুত্ববরণ এবং শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে সবসময় সব ধরনের সহায়তা প্রদান আমাদের অব্যাহত আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীও তাদের সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করছেন। তাদের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শহীদ পরিবারের জন্য এক লক্ষ করে টাকাও প্রদান করা হচ্ছে। এটি কোনো সহায়তা নয়, মূলত তাদের শোকের ভাগিদার হওয়ার সামান্য চেষ্টা মাত্র।
সম্প্রতি চলমান বন্যা পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ছাত্রশিবিরের সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। যে সমস্ত এলাকা বন্যায কবলিত হয়েছে, বিশেষ করে ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী। এ সকল এলাকায় ছাত্রশিবিরের অসংখ্য টিম এবং যে সকল এলাকায় বন্যা কবলিত নয় সে সকল এলাকার সংগঠনের দায়িত্বশীল এবং কর্মীগণের বিশেষ টিম বন্যা কবলিত এলাকায় অবস্থান করছে। এছাড়াও মেডিকেল ট্রিটমেন্ট টিম ত্রাণ সহায়তা এবং উদ্ধার কর্মসূচি চলমান রেখেছে।
সরকার পতনের পর ভারতীয় মিডিয়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রশ্নে রাজশাহী মহানগর শিবিরের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী না। বাংলাদেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা সবাই এদেশের মানুষ। বিভিন্ন সংখ্যালঘু এবং তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার যে তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে বাস্তবে সেগুলোর সত্যতা খুব বেশি একটা নাই।
গত ৫ তারিখে গণহত্যাকারী খুনি শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, ছাত্রশিবিরের সকল স্তরের জনশক্তি বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় এবং বাসা-বাড়ি পাহারা দিবে। অন্য ধর্মের কারো জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সজাগ থাকবে। আর একটি ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বলে যে ছাত্রশিবির শুধুমাত্র এই সময় তাদের পাশে থাকবে এমনটি নয়, বরং ছাত্রশিবির সব সময় তাদের পাশে ছিল ও আগামীতেও থাকবে।