খাগড়াছড়ি জেলার নদ-নদীর পানি নেমে যাওয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যামুক্ত হয়েছে জেলার বাসিন্দারা। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে সব শেষ দীঘিনালা উপজেলার মেরুং এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় এ বছরের চতুর্থদফার বন্যা থেকে মুক্ত হয়েছে এই জেলার বাসিন্দারা। তবে রয়ে গেছে ক্ষতচিহ্ন।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনুর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মেরুং এলাকার পানি নেমে যাওয়ায় উপজেলার আর কোথাও পানিবন্দি নেই কোনো পরিবার।
এবার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সড়ক অবকাঠামো, বাড়িঘর, আসবাবপত্রের পাশাপাশি পুকুর, খামার ও কৃষিজমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যায় সব খুইয়েছেন, এমন লোকের সংখ্যা বেড়েছে। কাঁচা ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে খাগড়াছড়ি সদরের মেহেদী বাগ, উত্তর এবং দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, গোলাবাড়ি হেডম্যান পাড়া এলাকার বেশ কয়েকজনের।
মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং এবং গোমতী ইউনিয়নের নিচু এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবারে মাটির তৈরি ঘর ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও আমতলী ইউনিয়নের দেওয়ান বাজার এলাকা, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নিচু এলাকার বেশ কিছু পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
অতিরিক্ত পানি হওয়ায় দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের হাজাছড়া, ২নং এবং ৩নং কলোনি এলাকার অধিকাংশ মানুষের ঘরের নিত্য ব্যবহারের আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া রামগড়ের সোনাইপুল এলাকায় বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উত্তর গঞ্জপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ থৈয়ংগ মারমা জানান, বন্যার পানিতে বসতঘর ভেঙে গেছে। পানিতে ঘরের সব আসবাবপত্র ভেসে গেছে। মাথা গোঁজবার ঠাঁই না থাকায় স্ত্রী নিয়ে উঠেছেন পাশের বাসায়।
পৌর এলাকার শান্তি নগরের বাসিন্দা সুমন চন্দ্র দে জানান, তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে পাশের বাসায় উঠেছেন। পানির তোড়ে বসতঘর ভেঙে নিয়ে গেছে। ঘরের কোনো আসবাবপত্র রক্ষা করতে পারেননি তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, বন্যার শুরু থেকেই জেলা প্রশাসন বন্যার্তদের কষ্ট লাঘবে নিরলসভাবে কাজ করেছে। প্রতিটি বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণসহ আটকেপড়াদের উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে কাজ করেছেন। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।