রাজশাহীতে গণত্রাণ দিতে মহা-প্রতিযোগিতায় জনসাধারণ


এম শামীম, রাবি প্রতিনিধি: , আপডেট করা হয়েছে : 25-08-2024

রাজশাহীতে গণত্রাণ দিতে মহা-প্রতিযোগিতায় জনসাধারণ

ছোট্ট শিশু আইরা ও আদিবা। বয়স তাদের পাঁচ বছরের একটু বেশি। বাবার সাথে নিজেদের জমানো টাকার ব্যাংক নিয়ে হাজির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণত্রাণ কর্মসূচিতে। জমানো টাকার সবটায় তারা দিতে চাই বন্যাকবলিত শিশুদের খাবার কেনার জন্য।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহীর জিরো পয়েন্ট বুথে গিয়ে দেখা মেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন চল্লিশোর্ধ্ব এক মায়ের সাথে। তিনি নিজেই মানুষের সাহায্য নিয়ে জীবন-সংসার অতিবাহিত করেন। কিন্তু দেশের মানুষ আজ চরম দূর্দশায় চুপ করে বসে থাকবেন কিভাবে? তাই তো নিজের সামর্থ অনুযায়ী সহযোগিতা করলেন বানভাসিদের জন্য।

অন্যদিকে বহরামপুর অঞ্চলে গণত্রাণ কর্মসূচিতে দৃষ্টিকাড়া আরেক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা। নিজের কাছে নেই কোনো টাকা-কড়ি কিংবা সম্পদ। তবুও মানবতা তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। তাই তো নিজের ঘরে থাকা শাড়ী, জুতাসহ দেবার মতো সবকিছুই তুলে দিলেন বন্যার্তদের জন্য।

কেবল শিশু-বৃদ্ধা কিংবা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ নন এ পাল্লা ভারি করে ত্রাণ তহবিলে নজরে মিলেছে বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের গোপন দানের মহা-প্রতিযোগী তারও। নাম-পরিচয় গোপন রেখে ১৮হাজার টাকা সাহায্য তহবিলে দিয়ে কাপড়ে মুখ ঢেকে নিজেকে আড়াল করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক মা। বারংবার নাম-পরিচয় জানতে চাইলে নিরবতাকেই প্রাধান্য দেন তিনি।

এ যেন ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশা, বয়সের উর্ধ্বে বন্যার্তের জন্য রাজশাহীবাসীর গণত্রাণ দেওয়ার এক মহা-প্রতিযোগিতা।

শুক্রবার (২৪ আগস্ট) গণত্রাণ তহবিলে মোট জমা পড়েছে ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৭৫ টাকা। এর মধ্যে অনলাইনে আদায় ১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা। অফলাইনে আদায় ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৭৪ টাকা।

এছাড়া বিপুল পরিমাণ পোশাক ও খাদ্য-সামগ্রী জমা পড়েছে। শক্রবার রাতেই ২টি ট্রাকে করে নোয়াখালীর বন্যার্তদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে রওনা করে রাজশাহীর মানুষের এ ভালোবাসা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহীর অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার এ বিষয়ে বলেন, এ এক অন্য বাংলাদেশ। ঠিক এ রকম বাংলাদেশই আমরা দেশে চেয়েছিলাম। ছোট্ট-শিশু থেকে বৃদ্ধা, ভিখারি কিংবা দিনমজুর, হিন্দু-মুসলিম-বোদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান, সকলেই নিজের জাতির জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের মা-বোনেরা বাসা থেকে চাল-ডাল, শুকনা খাবার, পোশাকসহ যা পারছে দিচ্ছে। অনেকেই ভাড়া ফ্রি করে দিয়েছে। যে ব্যক্তি ১০টাকা দিলেই যথেষ্ট সে কিনা ১০০-২০০ টাকা বের করে দিচ্ছে। আমাদের সহযোগিতা নোয়াখালীর বন্যার্তদের জন্য পাঠানো হয়েছে। গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি চলমান থাকবে। সকলেই নিজেদের সার্মথ অনুযায়ী সাহায্য করতে থাকুন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]