২০১৮ সালে হামলার অভিযোগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনানা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকালে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আওরঙ্গঁজীব মো. আব্দুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন।
বুধবার (২১ আগস্ট) চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, রাসিক মেয়রসহ আওয়ামী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর মধ্যে ১টি মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আলী রায়হানের ছোট ভাই রানা ইসমাইল (২১)। অপর মামলাটি করেন সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনুর বাসার সিরাপত্তাকর্মী।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার (৫৫), রবিউল ইসলাম রুবেল (৪০), আকাশ (২৮), মো. সোহাগ (২৯), মো. শফিক (৫০), মো. আক্তার আহম্মেদ বাচ্চু (৫০), উজ্জল (৩৮), মো. আরিফ (৩২), নজরুল (৫৫), আশরাফুল হাসান টনি (৩২), মো. মারফ (২৯), নিহাল (২৭), রবিন (৩২), মো. আরিফ (২৯), আশিক (২৮), আয়নাল (৫৫), মো. রফিকুল ইসলাম রফা (৪৮), মো. হিমেল (৩০), মো. পলাশ (৩৫), মো. আলামিন (৩৫), মো. সাহেব আলী (২৮), মো. সুজন (৩২), মো. আজমল হোসেন ছানা (৩০), মো. সাইদ (২৯), মো. রাব্বি (২৯), মো. রেজা (৪৮), মো. পাপ্পু (২৯), মো. নাহিদ (২৮), মো. ডালিম (২৭), মো. সজল (২৯), মো. রায়হান (৩০), মো. রাব্বি (২৭), মো. রিদয় (২৮), বিজয় (২৬), মো. অনি (২৮), মো. আব্দুল মোমিন (৪২), মো. রাজিব (৩৫)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনের মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজহারে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন মিজানুর রহমান মিনুর সমর্থনে চন্দ্রিমা থানার পদ্মা আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডে পোষ্ট অফিসের বিপরীতে নির্বাচনী ক্যাম্পে অবস্থান করি। এসময় উপরে উল্লেখিত এজাহারভুক্ত আসামীসহ অজ্ঞাত আসামীরা বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া হাতে লোহার রড, হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্পে অতর্কিত হামলা চালায় এবং নির্বাচন ক্যাম্প ভাংচুর করে। যেখানে আনুমানিক চল্লিশ হাজা টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, আসামীদের মারধরে আমিসহ অনেকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হই। সে সময় এজাহারনামীয় ৪নং আসামী আকাশ (২৮) এবং ১৪নং আসামি রবিন (৩২) তাদের নিকট থাকা মোট পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। যার ফলে আশেপাশের লোকজন ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। ৩নং আসামী রবিউল ইসলাম রুবেল (৪০) নেতৃত্বে পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক আমার প্যান্টের পকেট থেকে আনুমানিক বিশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
জানতে চাইলে মামলার বাদী আওরঙ্গঁজীব মো. আব্দুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। সেখানে আমার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী ক্যাম্পে অবস্থানকালে আমিসহ আরও অনেককেই বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসায় আমি মামলা করতে থানায় গেলেও আমার কোন মামলা নেওয়া হয়নি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমি আজকে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি। যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তিনি (রাবি অধ্যাপক) যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এজন্য একটু সময় লাগবে।