ফুলবাড়ীতে ইলিশের দাম শুনে ক্রেতাদের চক্ষু চড়কগাছ


কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : , আপডেট করা হয়েছে : 20-08-2024

ফুলবাড়ীতে ইলিশের দাম শুনে ক্রেতাদের চক্ষু চড়কগাছ

‘আগে মেটানো হবে দেশবাসীর চাহিদা, তারপর বিদেশে রপ্তানি হবে ইলিশ’ এমন খবরে আশা জেগেছিল স্বল্পমূল্যে পাতে উঠবে সুস্বাদু ইলিশ। কিন্তু বাজারের চিত্র পুরো ভিন্ন। এ যেনো আশাতে ছাই অবস্থা।

এমনটাই চিত্র দেখা মিলেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর মাছ বাজারে। একদিকে ইলিশের দাম শুনে সাধারণ ক্রেতাদের চক্ষু যেনো চড়কগাছ। অপরদিকে সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ দাবি বিক্রেতাদের।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) পৌর মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ মাছের পসরা নিয়ে বসেছেন তিনজন বিক্রেতা। বড় ইলিশের দেখা নেই, সর্বোচ্চ এক কেজি ওজনের ইলিশ রয়েছে পসরাগুলোতে। বাকিগুলোর ওজন কেজির নিচে। দাম বেশি হওয়ায় বিক্রেতাদের হাঁকানো দাম শুনেই মুখ ফিরিয়ে অন্যান্য মাছ দেখছেন ক্রেতারা।

জানা যায়, ছোট সাইজের ইলিশ (২০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ৪০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১ হাজার টাকা কেজি, ৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি আর এক কেজি সমমান ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

মাছ বাজারে এ দোকান থেকে ও দোকানে ঘুরতে দেখা যায় সাকিব রহমান নামের এক ব্যক্তিকে। তার সাথে কথা বললে, তিনি বলেন, খবরে দেখছি ইলিশের রপ্তানি বন্ধ তাই ইলিশ কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ফুলবাড়ী বাজারে এসে দেখি চিত্র পুরো ভিন্ন। বাজারে নেই পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ। গত বছর এই সময় জাটকার কেজি ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। বড় ইলিশ কেজি ছিল হাজারের মধ্যে। কিন্তু এখন যে দাম, এতে গরিবের পাতে ইলিশ উঠবে না।

প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র বলেন, বাজারে এসেছি ইলিশ কিনবো বলে। কিন্তু বাজারে এসে দেখি ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় ভালো মানের ইলিশ নেই। মেলাদিন ইলিশ মাছ খাওয়া হয়নি। গিন্নি ও বাচ্চাদের জন্য ইলিশ কিনতে এসেছি কিন্তু দাম শুনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে।

কাঁটাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা নূরুল ইসলাম বলেন, এতোদিন ইলিশ মাছ নিম্নবিত্ত পরিবারের নাগালের বাহিরে ছিল, কিন্তু বর্তমানে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোরও নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে। হাজার টাকার নিচে মিলছে না মাছ। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনেছি এক কেজি। মাছ কিনতেই পুরো পকেট ফাঁকা।

খাবার হোটেল ব্যবসায়ী উজ্জল মহন্ত বলেন, বাজারে ইলিশ মাছের দাম বেশি। হোটেলে ইলিশ মাছ বিক্রি করা দায় হয়ে পড়েছে। বেশি দামে ক্রেতারা খেতে চাননা। তাই ইলিশ মাছের তরকারি বন্ধ রেখেছি।

ইলিশ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, নদীতে জেলেরা মাছ ধরে পাইকারদের কাছে দেন। আর পাইকারের মাধ্যমে হাত বদল হয়ে বাজারে ওঠে মাছ। বাজারের চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। মাছ যদি জেলেদের কাছ থেকে সরাসরি বাজারে আসতো তাহলে, এ মাছের দাম সকলের নাগালে থাকতো।

পৌরবাজারের খুচরা ইলিশ মাছ বিক্রেতা আব্দুল জব্বার বলেন, আমরা মোকাম থেকে যে দামে ইলিশ ক্রয় করি, তা থেকে কেজিপ্রতি ২০/৫০ টাকা লাভ ধরে বিক্রি করি। পাইকারদের কাছে চাহিদা দিয়েও মাছ মিলছে না। মাছের সরবরাহ বেশি হলেই দাম কমে আসবে।

মাছ ব্যাবসায়ী মো. সমবারু ও মো. মালেকের সাথে কথা বললে তারা বলেন, জেলেরা তেমন মাছ পাচ্ছেন না, তাই ঘাটে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে মোকামগুলোতে মাছের সরবরাহ কম। চাহিদার তুলনায় মাছ কম থাকায় বেশি দামে কিনে, বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]