ভয়াবহ এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সাক্ষী হয়ে উঠেছে আফ্রিকান দেশ সুদানের একটি গ্রাম। ঘটনা এমন যে শিউরে উঠতে হয়। সুদানের আধাসামরিক গোষ্ঠীর যোদ্ধারা প্রথমে একটি গ্রামে লুটপাট করে এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এই হামলায় ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃততদের মধ্যে নিরীহ শিশু ও মহিলাও রয়েছে। এতে আহতও হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দারা শনিবার একথা জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এপি অনুযায়ী, সুদানে ১৮ মাস ধরে চলা সংঘর্ষে মধ্যে এটাই সর্বশেষ হামলা। এখানে যে ধরনের বীভৎসতা চালানো হয়েছে তা হল হৃদয় কাঁপানো।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স' (আরএসএফ) এর যোদ্ধারা গত জুলাই থেকে গালগানি নামে একটি গ্রামে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে, যোদ্ধারা সেন্নার প্রদেশের এই গ্রামে প্রবেশ করে এবং মহিলা ও শিশুদের জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদ করলে, নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এই হামলায় দেড় শতাধিক গ্রামবাসী আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে আরএসএফ যোদ্ধারা দেশজুড়ে গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করেছে।
গ্রামে তাণ্ডবের প্রত্যক্ষদর্শী তিন ব্যক্তি বলেছেন যে, আরএসএফ যোদ্ধারা তিন ঘন্টা ধরে আক্রমণ করেছিল। বাড়িঘর, দোকানপাট ও সরকারি অফিস লুটপাট ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে কর্মরত একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী জানান, প্রথমে অল্প সংখ্যক যোদ্ধা এসেছিলেন, কিন্তু পরে লোকজন প্রতিবাদ করলে তারা ফিরে যায়। আরেকজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী বলেছেন যে, কয়েক ঘন্টা পরে, কয়েকশো আরএসএফ যোদ্ধা কয়েক ডজন পিকআপ ট্রাকে চড়ে গ্রামে প্রবেশ করে এবং মানুষকে খুন করে।
সুদানে চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশেও দেখা দিয়েছে অনাহার পরিস্থিতি। আধাসামরিক বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সময়, বিপুল সংখ্যক মহিলা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং নির্দিষ্ট উপজাতীয় লোকদের নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। সুদানে সংঘাতের কারণে এক কোটিরও বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে ২০ লক্ষের বেশি মানুষ।