সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে চোরাকারবারীদের হামলায় বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডারসহ ৫জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন- উপজেলার বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার জাফর ও ৪ জন সৈনিক। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এঘটনার পর আজ রবিবার (১৮ আগষ্ট) দুপুর পর্যন্ত সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারীদের গ্রেফাতারের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার (১৭ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৭টা থেকে জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, পুরান লাউড়, সাহিদাবাদ ও দশঘর এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী বয়েজিদ মিয়া, জসিম মিয়া, নুরু মিয়া, নবীকুল, জজ মিয়াগং, টেকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইন, বুরুঙ্গাছড়া, বড়ছড়া, নীলাদ্রী লেক পাড় ও পুলিশ ফাঁড়ির সংলগ্ন এলাকা দিয়ে গডফাদার তোতলা আজাদের নেতৃত্বে চোরাকারবারী রফিকুল, আমীর আলী, নজরুল, মহিবুর, সাইদুল, রুবেল মিয়া, কামাল মিয়া, মিলন মিয়া, আক্কাছ, মকবুল, রহিছ ও আক্কল আলীগং, চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া, গারোঘাট, রাজাই, কড়ইগড়া ও বারেকটিলা এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী জামাল মিয়া, কালাম মিয়া, নজরুল, রুসমত, সাহিবুর, বুটকুন মিয়া, রফিকুল, তোতা মিয়া, রুসমতগং, বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, হোসেন আলী, ইয়াবা কালাম, জিয়াউর রহমান জিয়া ও মনির মিয়াগং, চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট, বাঁশতলা, এলসি পয়েন্ট, কলাগাঁও, জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী রফ মিয়া, আইনাল মিয়া, শামীম মিয়া, সাইফুল মিয়া, রিপন মিয়া, হযরত আলী, দীপক মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, বাবুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, সোহেল মিয়া, রুবেল মিয়া, জামির আলী, শরাফত আলীগং ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে লেংড়া জামালগং একযোগ কয়লা, চুনাপাথর, বালি, পেয়াজ, চিনি, ফুছকা, সুপারী, গরু, ঘোড়া, নাসির উদ্দিন বিড়ি, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, মোটর সাইকেল ও অস্ত্র পাচাঁর শুরু করে।
এখবর পেয়ে রাত ৮টায় বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার জাফর ৬-৭জন সৈনিক নিয়ে সীমান্তের লাকমা পশ্চিমপাড় এলাকায় গিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা আটক করলে গডফাদার তোতলা আজাদের নেতৃত্বে তার সোর্স রতন মহলদার, কামরুল মিয়া ও হোসেন আলীসহ আরো ২০-৩০জন চোরাকারবারী হামলা চালায়। এঘটনায় ক্যাম্প কমান্ডার জাফর ও ৪ সৈনিক আহত হয়। এর আগে লাউড়গড় ও চারাগাঁও সীমান্তে একই ভাবে হামালা চালিয়েছিল ওই গডফাদার ও তার বাহিনী। সম্প্রতি গডফাদার তোতলা আজাদকে গ্রেফতার ও তার ২০ কোটির টাকার অবৈধ অর্থ-সম্পদ উদ্ধার করে সরকারের হেফাজতে নেওয়ার দাবীতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে। ওই গডফাদারের নেতৃত্বে সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে চোরাই কয়লার গর্তে পড়ে ও নদীতে ডুবে শিশুসহ শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও সীমান্ত চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদারকে গ্রেফতারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধ করাসহ চোরাকারবারীদের গ্রেফতারের জন্য সেনা বাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
এব্যাপারে জানতে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সরকারী মোবাইলে কল করলে সিপাহী সাদেক ফোন রিসিভ করে বলেন- রাতে পাচাঁরকৃত কয়লা আটক করায় চোরাকারবারীরা আমাদের ওপর হামলা করে। জাফর স্যার আহত, তিনি বিশ্রামে আছেন কথা বলতে পারবেন না। টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডার কমান্ডার (০১৭৬৯-৬১৩১২৮) ওবায়দুর রহমান বলেন- সীমান্ত চোরাচালান ও হামলা বিষয়টি আমার কিছু করার নাই। আপনি এবিষয়ে সিও স্যারের সাথে কথা বলুন। সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের (সি ও) সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর কেউ ফোন রিসিভ করেনি।