শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কোস্টগার্ডের হাতে আটকের পর রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) গ্রেফতারের পর একইদিন দিবাগত মধ্যরাতে তাদেরকে ডিবির কার্যালয়ে নেয়া হয়।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের পাগলা থেকে তাদেরকে আটক করে কোস্টগার্ড। এরপর তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাদেরকে ডিবির হাতে সোপর্দ করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসানের দাবি, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। এদের মধ্যে একজন ছাত্র এবং একজন হকার। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এসব হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিউমার্কেট থানার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই দুজন মূলত নৌপথে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের গ্রেফতার করা হয় ভোলা থেকে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বেশিরভাগ বিমানবন্দরগুলোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যাতে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে না পারেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো কৌশলে নৌপথে দেশ পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছিলেন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক।
পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, থানায় নিয়ে আসার পর এই দুজনের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। তখন আরও নিশ্চিত করে বলা যাবে, তারা কীভাবে ও কোথায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় হস্তান্তরের পর সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিষয়ে কী কী আইনি প্রক্রিয়া নেয়া হবে, তখন জানা যাবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীরা গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ আবার এর আগেই দেশত্যাগ করেন। এছাড়া, ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে আটক করা হয়।
২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা) আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আইনজীবী আনিসুল হক। ওইবারই তাকে আইনমন্ত্রী করা হয়। এরপর থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর পদে ছিলেন।
সালমান এফ রহমান বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। পরে তাকে নিজের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জয়ী হন সালমান এফ রহমান।