রাজশাহী মহানগরীতে বিল্ডিং নির্মান করছেন বিধবা নারী মোসাঃ সেলিনা (৫৫)। ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না। বাড়িতেই থাকেন।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) মহানগরীর কাজলা (অক্ট্রয় মোড়) বিলপাড়া এলাকায় একদল চাঁদাবাজ যায় তার বাড়িতে। তাদের দাবি, আপনি অবৈধভাবে বিল্ডিং নির্মান করছেন। আপনার কোন ছাড় নাই। আমাদের মিষ্টি খেতে টাকা দিতে হবে। নইলে আরডিএ থেকে লোক পাঠিয়ে আপনার কাজ বন্ধ করে দেবো। ভয়ে ওই নারী তাদের ১হাজার টাকা দিতে চায়। চাঁদাবাজদের দাবি, আমরা ১লাখের উপরে নেই। এরপর ওই নারী বলেন, বাবা তোমরা ১০ হাজার টাকা নাও। শেষ পর্যন্ত ৫০হাজার টাকা নিয়ে চলে যায় চাঁদাবাজরা। এভাবেই কথাগুলি সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে বলেন অসহায় বিধবা নারী মোসাঃ সেলিনা। তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে জামাইরা রাজশাহীর বাইরে থেকে চাকরি করে। তারা অল্প অল্প করে আমার কাছে টাকা পাঠায়। সেই কষ্টের টাকা জমা করে একটি বাড়ি করছি। এ জন্যই দফায় দফায় আমার বাড়ির উপর ঝামেলা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে চাঁদাবাজরা। তিনি কয়েকজনকে চেনেন এবং নামও বলেছেন।
বিষয়টি বুধবার বিকালে স্থানীয়ভাবে নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোবারক পারভেজ জানানো হয়। তিনি বলেন, থানায় এসে অভিযোগ দিতে বলেন, ব্যস্থা নেয়া হবে। এদিন রাত ৮টার দিকে মতিহার থানায় ওসি তদন্তের কাছে যান ওই দুই নারীর জামাই। তবে তার দুই জামাই তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে কোন অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেননি। তারা ওসি তদন্তকে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছেন। তাদের উপস্থিতিতেই একজন চাঁদাবাজকে ফোন দিয়ে থানায় ডাকেন ওসি তদন্ত। কিন্তু সে পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। থানায় আসেন নি।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোবারক পারভেজ বলেন, সহযোগীতার অভাবে বড় বড় অপরাধ করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। ভুক্তভোগী অভিযোগ বা মামলা না দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।
এদিকে, বিধবা নারীর কাছে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় ক্ষুদ্ধ একাধীক এলাকাবাসী জানান, নগরীর মতিহার থানার কাজলা অক্ট্রয় মোড়ে একের পর এক বিল্ডিং নির্মান হচ্ছে। কিন্তু এই এলাকায় কখনই কোন বাড়ির মালিককে এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে কেউ চাঁদা নেয়নি। এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম। ভদ্র মহিলার স্বামী জিবিত নেই। তাছাড়া তিনি ঠিক মতো হাঁটা চলাফেরা করতে পারে না। ফলে তিনি মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না।
এ ব্যপারে মতিহার বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও নগর পুলিশের পুলিশ কমিশনার মহাদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
ভিডিও লিংক- https://www.youtube.com/watch?v=5UDy-StGj5c