২ বছর অপেক্ষার পর ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরোপের মুকুট পেল স্পেন


ক্রীড়া ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 15-07-2024

২ বছর অপেক্ষার পর ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরোপের মুকুট পেল স্পেন

ইংল্যান্ডের ৫৮ বছরের অপেক্ষা আরও বাড়িয়ে বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়াম ভাসল লাল উচ্ছ্বাসে। ২-১ গোলে ইউরোর ফাইনাল জিতে ১২ বছর পর আবার  ইউরোপের মুকুট ফিরে পেল স্পেন। স্পেনের নিকো উলিয়ামস ও মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলের মাঝে ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটা কোল পালমারের। ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে চতুর্থবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলো স্প্যানিশরা।

স্প্যানিশদের হয়ে ১টি করে গোল করেন উইলিয়ামস-ওয়ারজাবাল। ইংলিশদের হয়ে একমাত্র গোলটি আসে পালমারের পা থেকে। তিনটি গোলই হয় ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। ৪৭ মিনিটে গোল দিয়ে শুরুটা করেন স্পেনের উলিয়ামস। ৭৩ মিনিটে সমতা আনেন পালমার। শেষ বাঁশির ৪ মিনিট আগে জয়সূচক গোল করেন ওয়ারজাবাল। শেষ দিকে গোল লাইন থেকে বল বাঁচিয়ে স্পেনকে রক্ষা করেন অলমো। পুরো ম্যাচে স্প্যানিশদের দাপট ছিল চোখে লাগার মতো। ২২টি শট নিয়েছে স্পেন, বল দখলে ছিল ৬৬ শতাংশ সময়। অন্যদিকে ইংলিশদের শট মাত্র ১৩টি।

খেলার ৮৬ মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে নেন ওয়ারজাবাল। নিচু ক্রসে ডি বক্সে বল বাড়িয়ে দেন মার্ক। দৌড়ে এসে স্লাইড করে বল জালে জড়িয়ে দেন ওয়ারজাবাল। স্পেন ২, ইংল্যান্ড ১!

এর আগে ডান দিক থেকে এগিয়ে এসে সাকা বল বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে থাকা বেলিংহাম। কিন্তু বক্সে স্প্যানিশ ডিফেন্সের জট দেখে বেলিংহাম বল বাড়িয়ে দেন বাইরে থাকা পালমারকে। মাত্র ৩ মিনিট আগে কেনের বদলি হিসেবে মাঠে আসে পালমার অসাধারণ খিপ্র শটে বল জড়িয়ে দেন জালে। ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড।

বিরতির পর অন্যরূপে ফিরে স্পেন। ২ মিনিটের সময় উইলিয়ামসের গোল। মিনিট কয়েক পরেই অলমোর আক্রমণ। উইলিয়ামসের একটি শট চলে যায় বারের পাশ দিয়ে। খানিক বাদে ৬৬ মিনিটে বাঁ দিক থেকে দৌড়ে এসে নেওয়া ইয়ামালের একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট করেন পিকফোর্ড। ডি বক্সে স্প্যানিশদের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে দিশেহারা থ্রি লায়ন্স।

৪৭ মিনিটে ডান দিক ইয়ামালকে বল বাড়িয়ে দেন কার্ভাহাল। ১৬ বছর বয়সী ইয়ামাল জায়গা বানিয়ে বাঁ পায়ের ডিফেন্স চেরা পাসে ডান দিক দিয়ে বল দেন উইলিয়ামসকে। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে কোনাকুনি শটে উইলিয়ামস বল জড়িয়ে দেন জালে। পিকফোর্ড ঝাঁপ দিলেও পাননি নাগাল। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

প্রথমার্ধে স্প্যানিশরা দাপট দেখিয়ে খেলেছে। বড় সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও সর্বোচ্চ ৬টি শট নিয়েছে তারা। যাতে ১টি অন টার্গেট। অন্যদিকে স্পেনের আক্রমণ রুখতে ব্যস্ত থাকা ইংল্যান্ড শট নিতে পেরেছে ৪টি। অন টার্গেট ১টি। বল দখলের লড়াইয়ে বেশ এগিয়ে স্পেন। তাদের পায়ে বল ছিল ৭০ শতাংস সময়। একটি করে হলুদ কার্ড দেখেছে দুই দল। ইংল্যান্ডের কেন এবং স্পেনের অলমো হলুদ কার্ড দেখেন।

শুরুর আধঘণ্টায় স্পেন-ইংল্যান্ডের আক্রমণাত্বক মানসিকতা দেখা যায়নি। চলছে সাদামাটা লড়াই। দুই দলকে দেখা যাচ্ছে শুরুতে রক্ষণাত্বক খেলা খেলতে। বারবার আক্রমণে উঠার চেষ্টা করেও পারছেন না বেলিংহাম-ইয়ামালরা।

ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে বার্লিনের অলিম্পিয়া পার্কে মুখোমুখি স্পেন-ইংল্যান্ড। মনোমুগ্ধকর কনসার্টের পর বাংলাদেশ সময় রোববার দিবাগত রাত ১টায় লড়াই শুরু হয়।

নকআউট পর্বে স্পেন বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছে দারুণ লড়াকু জর্জিয়া, ইউরোর স্বাগতিক জার্মানি এবং বিশ্বকাপের সবশেষ আসরের রানার্সআপ ফ্রান্সের। মোদ্দা কথা, এবারের আসরে ফেভারিটের তালিকায় থাকা প্রায় সব দলকেই হারিয়েছে স্প্যানিশরা। শেষ লড়াইয়ে তাদের সামনে ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষাই দেওয়ার কথা।

এদিকে ইংল্যান্ড গ্রুপ পর্বে হারিয়েছে সার্বিয়াকে। এরপর ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ড্র করে কোনোমতে গ্রুপ পর্ব পেরিয়েছিল ইংলিশরা। নকআউটেও ‘থ্রি লায়ন্স’দের গর্জন শোনা যায়নি। শেষ ষোলোতে জুড বেলিংহ্যাম ও হ্যারি কেইনে ভর করে স্লোভাকিয়া বাধা পার হয় গ্যারেথ সাউথগেটের দল। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয়, সেমিতে ওলি ওয়াটকিন্সে রক্ষা।

পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, এখন অবধি দুই দেশ মুখোমুখি হয়েছে ২৭ বার। তাতে ইংল্যান্ড জিতেছে ১৪টিতে, স্পেন হেসেছে ১০বার। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দলের সবশেষ লড়াইটি হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নেশনস লিগের লিগ পর্বে। সেই ম্যাচে ইংল্যান্ড জেতে ৩-২ ব্যবধানে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]