প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি। জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের ৯৪ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনো পানিবন্দী। এরই মধ্যে আবার বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে আজ শুক্রবার বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাশাপাশি গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ফুলজোড়, ইছামতি, করতোয়া নদীর পানিও বেড়েছে। এতে নতুন করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে জেলার নিম্নাঞ্চল। এদিকে নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তীব্র হয়েছে নদী ভাঙ্গন। শেষ আশ্রয়টুকুও হারিয়ে ফেলার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে পড়েছেন তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, আজ সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৩৫ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে রেকর্ড করা হয়েছে ১৫.০৫ মিটার। এখানে পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমারা ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে বন্যার সঙ্গে লড়াই করছে সিরাজগঞ্জ। জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের ৩৩৫.৮৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ সময় পার করছে ২১ হাজার পরিবারের ৯৪ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সম্প্রতি যমুনার পানি কমতে শুরু করেছিল। তবে গত ২ দিন ধরে আবার পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা করছে মানুষ। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, শাহজাদপুর, বেলকুচি, এনায়েতপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনের তীব্রতাও বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। দুর্গত এলাকার মানুষকে নতুন করে খুঁজতে হচ্ছে মাথা গোঁজার ঠাই।
এদিকে নতুন করে পানি বাড়ায় ৯৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রোজিনা আক্তার জানান। আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বাবুল কুমার সুত্রধর জানান, জেলার ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচ, বীজতলা, বিভিন্ন সবজি ক্ষেত পানির নিচে রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, বানভাসীদের জন্য ১৩শ টন চাল, নগদ ২৫ লাখ টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ রয়েছে। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও চলছে।