পরস্পরের সাথে দেখা করার ইসলামি আদব বা সংস্কৃতি হলো সালাম বিনিময় করে পরস্পরের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা। ইসলামে সালাম বিনিময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেশি বেশি সালাম দিতে উৎসাহিত করে বলেছেন সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
والَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ حَتّٰـى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتّٰـى تَحَابُّوا أوَلاَ أدُلُّكُمْ عَلٰـى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوْهُ تَـحَابَبْتُمْ أفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ
সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে তোমরা মুমিন হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন কাজের কথা বলছি যা তোমাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম দাও। (সহিহ মুসলিম: ২০৩)
সালাম দেওয়ার সময় সম্মান দেখানোর জন্য মাথা ঝোঁকানো, পা স্পর্শ করা বা চুমু খাওয়া ইসলামি সংস্কৃতি নয়। ইসলামি সংস্কৃতি হলো সালাম দেওয়া, সালামের পাশপাশি করমর্দন বা মুসাফাহা করা যেতে পারে। আনাস (রা.) বলেন,
قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنحَنِي لَهُ؟ قَالَ لاَ قَالَ أفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ ؟ قَالَ لاَ قَالَ فَيَأخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ ؟ قَالَ نَعَمْ
এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কেউ তার ভাইয়ের সাথে বা বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তার সামনে কি মাথা নত করবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমো খাবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তার হাত ধরে তার সঙ্গে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (সুনানে তিরমিজি: ২৭২৮)
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পৃথিবীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে সম্মানিত মানুষ, তার চেয়ে সম্মানিত কোনো মানুষ পৃথিবীতে আসেননি, ভবিষ্যতেও আসবেন না। নবিজির (সা.) সামনেও সাহাবায়ে কেরাম মাথা ঝুঁকিয়ে সালাম করেননি। তাই কাউকে সম্মান দেখানোর জন্য পা ছুঁয়ে সালাম করা যেমন নিষিদ্ধ, কারো এ রকম প্রত্যাশা করাও নিষিদ্ধ যে অন্যরা তার পা ছুঁয়ে সালাম করবে, কেউ পা ছুঁয়ে সালাম করতে আসলে বরং শক্তভাবে নিষেধ করা জরুরি। মুয়াবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَمْثُلَ لَهُ الرِّجَالُ قِيَامًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে তার সম্মানে অন্যরা দাঁড়িয়ে থাকুক, সে জাহান্নামে তার জায়গা নির্ধারণ করে নেয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৫২২৯)