সিগারেটের থেকেও ক্ষতিকারক ব্রয়লার মুরগি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা!

আমিশ খাবারও সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে মুরগির মাংসের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। এই মাংস প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি -৩, ভিটামিন বি -৬, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির সমৃদ্ধ উৎস। কিন্তু সব ধরনের মুরগির মাংস স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।

বিশেষত, ব্রয়লার মুরগি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।

অনেক ক্ষেত্রেই ব্রয়লার মুরগিকে খাবারের সঙ্গে ক্ষতিকারক রাসায়নিক, অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। যা মাত্র ৪০ দিনের মধ্যেই তাদের দ্রুত বাড়তে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্রয়লার মুরগি খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের উপর বিভিন্ন বিপজ্জনক প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখে নেওয়া যাক, ব্রয়লার মুরগির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কী ভাবে ধরা পড়েছে।

১. ক্যানসারের কারণ হতে পারে: একটি গবেষণা (পোল্ট্রি কনজাম্পশন অ্যান্ড প্রস্টেট ক্যানসার রিস্ক) বলেছে, উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ফলে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। বিশেষত, পুরুষের প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আজকাল মানুষ তন্দুরি মুরগির জন্য পাগল। ভাজা বা পোড়ানো মুরগি উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হয় এবং এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।

২. ব্যাকটেরিয়া: বেশিরভাগ পোল্ট্রি ফার্মে এবং ব্রয়লার মুরগিতে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া থাকে (তাজা ব্রয়লার মুরগির মাংসে স্পাইলেজ ব্যাকটেরিয়া)। টাটকা এবং স্বাস্থ্যকর মাংস পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্রয়লার মুরগিতে উপস্থিত এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া একধিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে।

৩. সিগারেটের থেকেও ক্ষতিকারক: গ্রিলড এবং তন্দুরি ব্রয়লার মুরগি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। এগুলি ধূমপানের থেকেও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে (ব্রয়লারের একটি লেগ রোস্ট ৬০টি সিগারেটের সমান ক্ষতিকারক)। ব্রয়লার মুরগিতে থাকা প্রোটিনের অণুগুলি নিজেদের পরিবর্তন করতে পারে এবং উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হলে বিপজ্জনক অসুস্থতার কারণ হতে পারে।

৪. অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট: ব্রয়লার মুরগিতে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। স্বভাবতই সেগুলি সুস্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। ব্রয়লার মুরগির মাংস নিয়মিত খাওয়ার ফলে স্থূলত্ব, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। যে কারণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, ব্রয়লার মুরগি খাওয়া বন্ধ করে দেশি মুরগির মাংসের উপর নির্ভর করুন।

৫. ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান: উৎপাদন এবং ওজন বাড়ানোর জন্য ব্রয়লারগুলিকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক, অ্যান্টিবায়োটিক এবং গ্রোথ হরমোন দিয়ে ইনজেকশন দেওয়া হয়। এগুলি খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের উপর বিপজ্জনক প্রভাব পড়ে। যা স্থূলত্ব, পুরুষের প্রজনন, মেয়েদের বয়ঃসন্ধি ইত্যাদিতে সমস্যার কারণ হতে পারে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: ব্রয়লারগুলিকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানো হয়। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতির কারণে মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, এক সপ্তাহে তিনবার ব্রয়লার মুরগি খাওয়া তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন নেওয়ার সমান।

৭. পুরুষের বন্ধ্যাত্ব: বর্তমানে পুরুষ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ব্রয়লার মুরগির মাংস। গবেষকদের দাবি, ব্রয়লার মুরগিতে উপস্থিত রাসায়নিকগুলি পুরুষের শুক্রাণু ধ্বংস করে এবং সেগুলিকে অক্ষম করে তোলে।