সুনামগঞ্জে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী ও হাওরের পানি। ফলে জেলা জুড়ে আবারও দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বর্তমানে সুরমা নদীর পানি ছাতক ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা শহরের সাথে বন্ধ হয়েগেছে কয়েকটি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। তাই নৌকা যোগে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতাযাত করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষদের মাঝে বন্যা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার (১লা জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিন ঘুড়ে দেখা গেছে- জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার দূর্গাপুর ও শক্তিয়ারখলা বাজার সংলগ্ন ১শ মিটার এলাকার প্রধান সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এর ফলে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া পাশের তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর সেতু সংলগ্ন সড়কসহ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক পুরোপুরি পানিতে ডুবে রয়েছে। অন্যদিকে মধ্যনগর ও ধর্মপাশাসহ জামালগঞ্জ, শাল্লা, দিরাই উপজেলার নিন্মঞ্চল ও হাওরের অবস্থান করা লাখলাখ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে গেছে। এদিকে সীমান্ত নদী জাদুকাটা, পাটলাই, রক্তি, বৌলাই, চলতি, সুমেশ^রী, উবদাখালী ও চেলাসহ একাধিক নদী দিয়ে মেঘালয় থেকে পাহাড়ি ঢল আসা অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা গেছে-সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার পৌরশহরের নবীনগর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৭.৮৩ সেন্টিমিটার যা বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৭০ মিলিমিটার। তবে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে নদী তীরবর্তী ও হাওরের নিন্মঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে। একারণে জেলার হাওর এলাকায় বসবাসকারী লাখলাখ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
এব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন- প্রথম দফা বন্যার রেষ কাটতে না কাটতেই আবারো পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বন্যা আতংক দেখা দিয়েছে জনসাধারণের মাঝে। তবে আগামী ৪৮ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বন্যা মোকাবেলা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।